অনেক দিন পর নানাবাড়ি গেলাম। বরাবরের মতোই মায়ের চোখ এড়িয়ে নানুর বিছানায় শুয়ে বিভিন্ন মসলা মিশিয়ে কুটকুট করে পান খাচ্ছি। এমন সময় নানু আমার হাতে ৫০টি টাকা দিয়ে বললেন, ‘ভাই, এক দৌড়ে ছানির দোকান থেকে একচল্লিশ পান নিয়ে আয়। আর তোর জন্য চকোলেট।’ আমি এক লাফে উঠে গিয়ে পান নিয়ে এলাম। চকোলেট চিবুতে চিবুতে নানুর গলা জড়িয়ে ধরে বললাম, ‘নানু, পান তো এনে দিলাম। এবার গল্প শোনাও।’ দাঁড়াও ভাই, পানটা মুখে দিয়ে নিই, বলে নানু পানের কৌটা হাতে নিলেন। হঠাৎ কারেন্ট চলে গেল। নানু অন্ধকার হাতড়ে পান, খয়ের, চুন, আর বিভিন্ন মসলা মিশিয়ে পান মুখে দিয়ে চিবুতে লাগলেন। নানুর মুখ থেকে চমৎকার এক সুঘ্রাণ বের হয়ে ঘরজুড়ে ম-ম করতে লাগল। ‘ভাই, কয় টাকা খরচ করলা? নানু জিজ্ঞেস করলেন। আমি বললাম, ৩০ টাকা খরচ হইছে নানু। আর ২০ টাকার নোটটা তো পানের সঙ্গে কৌটায় রাখছি। সঙ্গে সঙ্গে নানু হায় হায় করে উঠলেন। ‘কও কি ভাই, আমি তো মনে হয় পানের সঙ্গে ২০ টাকার নোটও খায়া ফালাইছি!’ লাফিয়ে উঠে টর্চ জ্বালালাম। নানু মুখ থেকে বের করে আনলেন পান-সুপারির সঙ্গে দলানো-মোচড়ানো ছিঁড়ে কয়েক টুকরো হয়ে যাওয়া ২০ টাকার নোটটি। তাই তো বলি, ‘এতক্ষণ ধরে চিবোচ্ছি কিন্তু কোনো রস পাচ্ছি না কেন।’
শুভ্র
মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রাম।
Leave a Reply