অনন্তকাল বসে আছি গাছের ওপরে।
ও এখনো এল না।
নেমে এলাম গাছ থেকে। ছড়ি নিলাম হাতে। নিজেকে মানুষ বলে মনে হতে লাগল।
ও এখনো এল না।
সময়কে যুগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। প্রস্তর যুগ, তুষার যুগ…
শীত পড়ল ভয়ানক। জমতে শুরু করল চারপাশের সবকিছু।
ও এখনো এল না।
বরফ গলে গেল। তৈরি করলাম জলঘড়ি। আরও চার বালতি সময় অপেক্ষা করব। তারপর চলে যাব। সময় বয়ে যাচ্ছে তরতর করে।
অথচ ও এখনো এল না।
সরে গেল বরফগলা পানি। বেরিয়ে পড়ল বালুময় তলদেশ। অপেক্ষা করতে শুরু করলাম বালুঘড়ির নিচে দাঁড়িয়ে। পাঁচ কোদাল বালুর বেশি দেরি করলে চলে যাব।
গোত্রের লোকজন ফিরে এল শিকার শেষে।
ও এখনো এল না।
ঘোড়া, গরু, ভেড়া এখন গৃহপালিত জন্তু।
ও এখনো এল না।
মন-মেজাজ বিশেষ ভালো নেই। যুগটা সুবিধার নয়। মধ্যযুগ। ক্রুসেডে অংশগ্রহণকারীরা চলে গেল পাশ দিয়ে।
টাওয়ারের ঘড়িটায় বেজে উঠল মধ্যরাতের ঘণ্টা। টাকা বদলিয়ে ফুল পাওয়া গেল বহু কষ্টে।
তাকিয়ে আছি বৈদ্যুতিক ঘড়িটার দিকে। অপেক্ষা আর খুব দীর্ঘ হবে না। কয়েক কিলোওয়াট-ঘণ্টা।
সময়সূচি দেখানোর জন্য আবিষ্কৃত হলো ইলিউমিনেটেড ইনডিকেটর বোর্ড। সেরপুকভগামী ট্রেনটা ছাড়ল ১২ মিনিট দেরিতে।
ও এখনো এল না।
পরিশ্রান্ত মহাকাশ-ট্যাক্সিগুলো ফিরে যেতে শুরু করেছে মকরক্রান্তি-ডেপোর দিকে।
‘ইস্! আমার একটু দেরি হয়ে গেল!’ মুখে হাসি টাঙিয়ে বলল ও। ‘কিছুতেই স্থির করতে পারছিলাম না, কোন পোশাক পরে তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসব।’
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ২১, ২০১০
Leave a Reply