হ্যাঁ, ভাই! এ এক চরম ক্লাইমেক্স। বাড়িতে বাড়িতে আজ বিদেশি পতাকা। কিন্তু একি! সব মানুষের মধ্যে কেন এত উৎকণ্ঠা? কেন সবার চোখ আটকে আছে টিভির পর্দায়? হ্যাঁ ভাই, সগৌরবে চলিতেছে ফিফা আয়োজিত ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ…বিশ্বকাপ…বিশ্বকাপ। একটি কাপের জন্য ৩২টি দেশের মহা লড়াই…লড়াই…লড়াই। কিন্তু এ লড়াই শেষ নয়। লড়াই আরও আছে। অধিকার আদায়ের লড়াই। রিমোট কন্ট্রোলের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াই। ঘটনা হলো, বিশ্বকাপ শুরু হয়ে যাওয়ায় টিভি দেখা এবং রিমোট কন্ট্রোলের ওপর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে দুটি দলের সৃষ্টি হয়েছে। একদল বিশ্বকাপের খেলা দেখতে চায়। সাধারণত বাড়ির পুরুষ ও ক্রীড়াপ্রেমীরা এই দলের সক্রিয় সদস্য। এদের মতে, ‘এত দিন সব অত্যাচার সহ্য করেছি। কিন্তু আর না। চার বছর পর বিশ্বকাপ হচ্ছে, বিশ্বকাপের প্রতিটি খেলা আমরা দেখবই। কোনো অশুভ শক্তি আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’ অন্য দলে রয়েছে বাড়ির গৃহকর্ত্রী, তরুণী কন্যা, বুয়া প্রমুখ। তাঁরা চায়, টিভিতে হিন্দি সিরিয়াল দেখতে। তাঁদের মতে, ‘আমরা এত দিন ধরে এই সিরিয়ালগুলো নিয়মিত দেখে আসছি। ভূমিকম্প হলেও আমরা সিরিয়াল দেখা মিস করি না। আর সামান্য বিশ্বকাপ দেখার জন্য সিরিয়াল দেখব না, এটা তো হতেই পারে না।’ ভয়ংকর সংঘাতময় অবস্থা। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর থেকেই এই দুটি গ্রুপ পরস্পরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এখনই এদের মধ্যে হস্তক্ষেপ না করলে যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত, এখনই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী রুটিন তৈরি করে বাড়িতে বাড়িতে ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এতে করে দুই দলই রুটিন অনুযায়ী টিভি ও রিমোটের সমান দখল পাবে। তা ছাড়া বিশ্বকাপ সরাসরি দেখানো হচ্ছে, অতএব খেলা চলাকালে অনুষ্ঠিত সিরিয়ালগুলো বিশেষ পদ্ধতিতে রেকর্ড করে রাখা যেতে পারে। খেলা শেষ হলেই রেকর্ড করা সিরিয়াল বিপক্ষ দলের কাছে হস্তান্তর করা যেতে পারে। এতে দুই দলই শান্ত হয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা যায়। আশা করি, কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারটি ভেবে দেখবে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১৪, ২০১০
Leave a Reply