ফুসকুড়ি উঠল দুকভের। ঘাড়ে। দুকভ গেল ডাক্তারের কাছে। ফুসকুড়ি প্রতিষেধক ওষুধ দিল ডাক্তার। দুকভ ওষুধ খেল, ঘুরে উঠল মাথা।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
দিল অন্য ওষুধ মাথা ঘোরা বন্ধ করার। দুকভ খেল। চুল পড়তে শুরু করল তার। দুকভ গেল ডাক্তারের কাছে।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
দিল টাক প্রতিষেধক ওষুধ। দুকভ খেল। শুরু হলো দাঁতব্যথা। দুকভ দৌড়াল ডাক্তারের কাছে।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
দাঁতের ব্যথা সারার ওষুধ দিল। দুকভ খেল। প্যারালাইসিস হয়ে গেল দুই পায়ে। দুকভ ডাক্তারের কাছে গেল কোনোমতে।
ডাক্তার আবার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
প্যারালাইসিস নিরাময়ের ওষুধ দিল। দুকভ খেল। কান কট্কট্ করতে শুরু করল।
দেখে ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
ক্লোরিন দিয়ে কান পরিষ্কার করল। খসে পড়ল দুকভের দুই কান।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
ইনজেকশন দিল। ৫০০ সিসি করে। মাথার দুই পাশে। দুকভের চোখ কপালে উঠে গেল।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
দুকভ জিজ্ঞেস করল, এখন কী করা?
ডাক্তার উত্তর দিল, বিদ্যুতের শক দিয়ে চিকিৎসা করা হবে।
শক দেওয়া হলো। প্রথমে ২২০ ভোল্ট, পরে ৩৮০। দুকভের দুই চোখ চলে গেল মাথার পেছনে।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
অপারেশন করল। প্রথমে সারা শরীরে দেখা দিল লাল লাল দাগ। পরে সবুজ সবুজ।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। আকুপাংচারে কাজ হতে পারে।
শরীরের যেখানে যেখানে সুচ ফোটানো সম্ভব, ফোটাল। পাথরের ব্যথা শুরু হলো কিডনিতে।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। জলচিকিৎসা করতে হবে।
কিডনির ব্যথা প্রবলতর হলো।
ডাক্তার বলল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
পাথর গুঁড়ো করে ফেলতে হবে।
হাতুড়ি নিয়ে কাজে নেমে পড়ল ডাক্তার। দুকভের হার্ট অ্যাটাক হলো।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ডাক্তার বলল, ভান করতে আপনি যদিও ভালোই পারেন, তবু মেডিকেল লিভের একটা সার্টিফিকেট আপনাকে দিচ্ছি।
এক মাসের লিভ? জিজ্ঞেস করল দুকভ।
এক মাসের মানে? ডাক্তার বলল, শুধু আজকের। কাল থেকেই আবার কাজে যাবেন।
শুনেই মারা গেল দুকভ।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল ডাক্তার, বের করে নিয়ে যাও ওকে। নেক্সট!
আন্তোন মাকুনি
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ১৯, ২০১০
Leave a Reply