২০১০ সালে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। একবারও কি ভেবেছেন আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা? কেমন হবে তারা, দৈনন্দিন জীবনে কী কী পরিবর্তন আসবে সে সময়ের দুনিয়ায়? থাক, আর কষ্ট করে কাজ নেই। রস+আলো যথেষ্ট পরিশ্রম করে (ওয়েবসাইট ঘেঁটে) ৩০০০ সালটা দেখেছে। এবার আপনি দেখুন।
প্রতিদিন সাতসকালে শেভিং ক্রিম, ব্রাশ আর রেজর নিয়ে টানাটানির দিন শেষ হয়ে যাবে। এসে যাবে অটো শেভিং পদ্ধতি। দেয়ালে লাগানো অটো শেভার আপনার দাড়ি-গোঁফ কামিয়ে দেবে পরম যত্নে।
নিজের ওজন থেকে দ্বিগুণ ওজনের ব্যাগ বহন করে করে পিচ্চিরা আর মাথা নত করবে না। ৩০০০ সালে পিচ্চি সোনামণিদের পিঠের ব্যাগের একজোড়া পা থাকবে, আর সেই পা তাকে হেঁটে হেঁটে নিয়ে যাবে স্কুলে-বাসায়, যখন যেখানে দরকার। (চাইলে স্কুল পালানোও যাবে!)
ঠান্ডা লেগে যখন নাকে বুড়িগঙ্গার স্রোতের মতো সর্দি বেরোতে শুরু করে, যন্ত্রণার শেষ নেই আর! তাই ৩০০০ সালে অটোমেটিক টিস্যু পদ্ধতিতে নিমিষেই মুশকিল আসান।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ব্রাশ দিয়ে নানা কেমিক্যালসমৃদ্ধ মেকআপ-সামগ্রী মুখে মাখার সময় কোথায়! আর আপনার ত্বকই বা আর কত দিন সহ্য করবে সেসব! তাই এসে যাবে ‘ছাপ মেকআপ’। ছাপ মেকআপ এক মুহূর্তেই আপনার মূল্যবান সময় বাঁচিয়ে সাজিয়ে দেবে আপনাকে, যেমনটা আপনি চান! অনেকটা সিল-ছাপ্পর মারার মতোই!
কাজ, কাজ আর কাজ! ঘুমানোরই সময় নেই! ব্যায়াম তো দূরের কথা। কিন্তু সুস্থ থাকতে হলে ব্যায়াম অতি জরুরি। তাই রোবট ব্যায়ামবিদ আপনার ঘুমের মধ্যে আপনাকে ডান বাম ডান, মানে শারীরিক কসরতের কাজটা করে দেবে।
সার্ফিংয়ের বেজায় শখ। কিন্তু উত্তাল সমুদ্র তো আর হাত বাড়ালেই পাচ্ছেন না। তাই ৩০০০ সালে আপনার কমোডেই সার্ফিংয়ের সাধ মেটাতে পারবেন অনায়াসে।
৩০০০ সাল এলে ঢাকার জ্যামও ৩০০০ গুণ বাড়বে—এটা নিশ্চিত। তাই বিকল্প যান অতি জরুরি। হেলিকপ্টার ক্যাপ এ যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই দেবে আপনাকে। যখন যেখানে ইচ্ছে, হেলিকপ্টার ক্যাপ পরেই ছুটে যাবেন এক পলকে।
কম্পিউটারে উল্টাপাল্টা কিছু লিখবেন? উপায় নেই। কম্পিউটার এতটাই সেয়ানা হয়ে যাবে যে খারাপ কিছু করলেই কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা হয়ে যাবে সঙ্গে সঙ্গে। (প্রথম প্রথম হয়তো আপনাকে সংশোধনের ব্যবস্থাও নিতে পারে আপনার কম্পিউটারটি।)
৩০০০ সালে একেকজন খেলোয়াড় একেকটা টাকার কুমির বনে যাবেন। তাই কষ্ট করে রোদের মধ্যে আর দৌড়াদৌড়ি কেন! লোক ভাড়া করে নিজের খেলাটা খেলে নেবেন তাঁরা। তাতে করে ডায়াবেটিক রোগীদেরও একটা বিশাল উপকার হবে।
জ্বালানি ঘাটতির কারণে স্কুলের বাচ্চাদের আনা-নেওয়ার জন্য বাসের বদলে সার্কাসের লোকদের ডেকে আনা হবে। এক চাকার সাইকেলে খেলা দেখাতে দেখাতে বাচ্চারা স্কুলে যাবে, সঙ্গে ফাও বিনোদন। সার্কাসের ভবিষ্যৎও ট্রাকের হেডলাইটের মতো উজ্জ্বল!
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ১৯, ২০১০
Leave a Reply