জেনারেল ইয়াহিয়া রাগান্বিত হয়ে এক সেনাকে বরখাস্ত করে দিয়ে বললেন, ‘আমি নিশ্চিত, আর্মি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর তুমি আমার মৃত্যু কামনা করবে, যাতে করে তুমি আমার কবরের ওপর থুথু নিক্ষেপ করতে পারো।’
সৈন্যটি বলল, ‘না স্যার। বরখাস্ত হওয়ার পর আমি আর লাইনে দাঁড়াতে চাই না।’
পাকিস্তানি এক ক্যাপ্টেন প্রায় নাচতে নাচতে এসে জেনারেলকে বললেন—
: স্যার, আমি এইমাত্র এমন একটা জিনিস আবিষ্কার করেছি, যা ৫০ জন মুক্তিসেনার সঙ্গে লড়তে সক্ষম।
জেনারেল: কী সেটা?
: ২০০ জন পাকসেনা।
জেনারেল ইয়াহিয়া আসছেন সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট পরিদর্শনে। মূল ফটকের পাহারায় আছে এক সেন্ট্রি।
ক্যাপ্টেন: জেনারেল এলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবে।
সেন্ট্রি: ইয়েস স্যার।
এক ঘণ্টা পর—
ক্যাপ্টেন: জেনারেল কি এসেছেন?
সেন্ট্রি: নো স্যার।
দুই ঘণ্টা পর—
ক্যাপ্টেন: জেনারেল কি এসেছেন?
সেন্ট্রি: নো স্যার।
অবশেষে তিন ঘণ্টা পর জেনারেল ইয়াহিয়া এলেন।
সেন্ট্রি: ফাজিল কোথাকার! কোথায় ছিলি তুই এতক্ষণ? ক্যাপ্টেন তোকে খুঁজছে।
পাকিস্তানি নৌপ্রধান: তা, তোমার সেনারা কেমন?
সেনাপ্রধান: ওরা অনেক সাহসী।
নৌ: আমি দেখতে চাই।
সেনাপ্রধান এক জওয়ানকে ডেকে বললেন, ‘ওই যে ট্যাংকটা আসছে, ওটাকে গায়ের জোরে থামাও।’
‘পাগল নাকি!’ বলে জওয়ানটি চলে গেল।
‘তুমি যে বলেছিলে ওরা অনেক সাহসী?’ নৌপ্রধান বললেন।
সেনাপ্রধান: কজন জওয়ান জেনারেলের সঙ্গে এভাবে কথা বলতে পারবে?
একজন পাকিস্তানি নতুন কর্নেল তাঁর নতুন অফিসে এসেছেন। একজন সেনা এসে দরজায় নক করতেই কর্নেল টেলিফোনে কথা বলতে শুরু করলেন, ‘ইয়েস প্রাইম মিনিস্টার, ইয়েস, আমি এখনই আসছি।’
এরপর সেনাটির দিকে তাকিয়ে কর্নেল জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী চাই?’
সেনা: স্যার, আমি আপনার টেলিফোনটা ঠিক করতে এসেছি।
এক পাকিস্তানি সার্জেন্ট ২০ জন সেনাসদস্যের একটি দলের উদ্দেশে বললেন, ‘আমি ঠিক করেছি, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে অলস যে, তাকে সবচেয়ে সহজ কাজটা দেব। কে সবচেয়ে অলস? ১৯ জন সদস্যই হাত তুলল। সার্জেন্ট হাত না তোলা সদস্যটিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি হাত তুলছ না কেন?’
সৈন্য: স্যার, হাত তুলতে কষ্ট হয়।
একদিন সকালে পাকিস্তানি সেনারা তাদের প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে গিয়ে জানতে পারল, আজকে বন্দুক চালনার প্র্যাকটিস হবে না। সেনারা খুশি মনে তাঁবুতে ফিরে যাচ্ছিল। কিন্তু একটু পরেই তারা শুনল, রোজকার মতো তাদের শারীরিক ফিটনেসের প্র্যাকটিস হবে। শুনে এক সেনা বলল, ‘দেখো, বাঙালি সেনাদের উদ্দেশে আমরা গুলি ছুড়তে পারব কি না, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু, ওরা গুলি করলে দৌড়াতে পারব কি না, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত।’
একজন পাকিস্তানি কোস্টগার্ডের কাছে একটি মেসেজ এল।
‘হ্যালো! হ্যালো! আমরা আমাদের একটি বিমানের সঙ্গে সব যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছি। দয়া করে আপনি আরেকটি প্লেন পাঠিয়ে ওটাকে খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করুন।’
‘বিমানটিকে সর্বশেষ কখন, কোথায় দেখা গেছে?’
‘এটা বলা যাবে না। সিক্রেট।’
এক পাকিস্তানি জওয়ান গেছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। কোনো কারণে সে তার হাত দুটো মাথার ওপর তুলতে পারছিল না। ডাক্তার বললেন, ‘সমস্যা নেই। তুমি পাস। আত্মসমর্পণের আগে তোমাকে আর হাত তুলতে হবে না।’
পাকিস্তানি আর্মি ক্যাম্পের সামনে একটি বুলেটিন বোর্ডে কিছু নামের তালিকা। এর শেষে লেখা—‘উল্লিখিত জওয়ানদের সদাচরণের জন্য সাপ্লাই রুমে সকাল নয়টায় পুরস্কৃত করা হবে। যথাসময়ে কেউ উপস্থিত না থাকলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সাবেক এক পাকিস্তানি সেনা তার নাতির কাছে যুদ্ধের স্মৃৃতি রোমন্থন করছিল—
নাতি: দাদু, যুদ্ধের সময় তুমি তো একজন সেন্ট্রি ছিলে। রাতে পাহারা দিতে তোমার ভয় করত না?
দাদু: মাঝেমধ্যে করত।
নাতি: কখন?
দাদু: যতক্ষণ না আমি ঘুমিয়ে পড়তাম।
ইয়াহিয়ার সেনারা কি ডগ স্যান্ডউইচ খেত?
—না। পাউরুটি তাদের সহ্য হতো না।
একদিন পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পের সামনে একটা ছোট্ট বাঙালি ছেলে একটা ছাগল চরাচ্ছিল। খানসেনারা ভাবল, ওর সঙ্গে একটু মজা করা যাক। একজন সেনা বলল, ‘কি হে, নিজের ভাইকে এত জোরে জোরে পেটাও, এত নির্দয় কেন তুমি?’
ছেলেটা বলল, ‘কী করব? না পেটালে তো এত দিনে খানসেনাদের দলে গিয়ে ভিড়ত।’
বাংলাদেশি সেনাদের সঙ্গে গুলিবিনিময়কালে একবার সব পাকিস্তানি সেনা দৌড়ে পালাতে লাগল। হতভম্ব জেনারেল চিত্কার করে বললেন, ‘যাও সবাই, আবার যার যার পজিশনে ফিরে যাও। তোমরা দৌড়াচ্ছ কেন?’
‘কারণ, আমরা উড়তে পারি না।’
একজন পাকিস্তানি সেন্ট্রি সবে নিয়োগ পেয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি যেন ঢুকতে না দেয় এবং কেউ জোরপূর্বক ঢুকতে চাইলে তাকে যেন গুলি করা হয়। তো একদিন সেই সেন্ট্রি পাহারায় থাকাকালীন এক জেনারেল গাড়ি নিয়ে গেট দিয়ে ঢুকতে চাইলেন। জেনারেলের গাড়িতে স্টিকার নেই।
সেন্ট্রি: সরি স্যার! আপনি ঢুকতে পারবেন না।
জেনারেল: আমি জেনারেল খান।
সেন্ট্রি: সরি জেনারেল! আপনি ঢুকতে পারবেন না।
জেনারেল: ড্রাইভার, গাড়ি ঢোকাও।
সেন্ট্রি: সরি স্যার! আমি কিন্তু গুলি করতে বাধ্য হব।
জেনারেল: ড্রাইভার, গাড়ি ঢোকাও।
সেন্ট্রি: সরি স্যার! আসলে আমি চাকরিতে নতুন এসেছি তো, তাই অনেক কিছু জানি না। আপনাকে গুলি করব, নাকি আপনার ড্রাইভারকে?
কৌতুক সংগ্রহ: আলিয়া রিফাত
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২২, ২০১০
Leave a Reply