আরে দূর! আবার লোডশেডিং শুরু হয়েছে। অথচ গ্রীষ্মকাল আসতে এখনো অনেক দিন বাকি। এরই মধ্যে সংবাদপত্রে বড় বড় হেডিং—গ্রীষ্মকাল আসার আগেই ভয়াবহ লোডশেডিং। মনে হচ্ছে লোডশেডিং গ্রীষ্ম-বর্ষা বোঝে না। লোডশেডিংকে সবাই ভালোবেসে বলে ‘কারেন্ট যাওয়া’। আর এই কারেন্ট যাওয়াটা বাংলাদেশের ব্যাটম্যানদের মতো না, যে ক্রিজে গিয়েই কিছুক্ষণের মধ্যে আউট হয়ে ফিরে আসবে। কারেন্ট একবার গিয়ে কমপক্ষে এক ঘণ্টা না থেকেই চলে এসেছে এমন ঘটনা ইতিহাসে বিরল। সুন্দরবনের বাঘের মতো এই ঘটনাও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেকে সন্ধ্যা হলেই ঘরের বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে বসে থাকে। তবে আমাদের সরকার এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। কোনো এলাকায় কখন লোডশেডিং হবে, সে সময়সূচি তারা একটি ওয়েবসাইটে দিয়ে রেখেছে। যাতে আগে থেকেই সবাই প্রস্তুত হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেই রুটিনটাই কেউ দেখতে পারে না। এই দুঃখের কথা কাউকে বলা যায়? লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের দুঃখের কোনো শেষ নেই। আর একপক্ষের দুঃখে অন্য পক্ষ দাঁত কেলিয়ে হাসবে এটাই জগতের কঠিন সত্য। সে জন্যই লোডশেডিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে মোমবাতি-হারিকেন বিক্রেতার মুখের হাসিও চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। বড়ই আফসোস। তবে এই মোমবাতি-হারিকেন ছাড়া আমাদের কোনো গতি নেই। কারণ গ্রীষ্মকাল এলে লোডশেডিং আরও বাড়বে। অতএব এখনই মোমবাতি সংগ্রহ করা শুরু করুন। ডাকটিকিটফিকিট না জমিয়ে মোমবাতি জমান। লোডশেডিংয়ে ডাকটিকিট কোনোই কাজে আসবে না, কাজে আসবে এই মোমবাতি। তাই, আপনাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। মনে রাখবেন. কারেন্ট যখন যাচ্ছে, কারেন্ট আরও যাবে। এ দেশের মোমবাতি ব্যবসায়ীদের ধনী করে ছাড়বে ইনশাল্লাহ…।
(আরও কিছু জ্বালাময়ী বক্তব্য লেখার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু উনি চলে গেছেন, মানে কারেন্ট চলে গেছে। লোডশেডিং। দেশের হবেটা কী? শান্তিমতো একটা বক্তব্য দেব, তারও উপায় নেই। ধ্যাত্! ভালোই লাগে না!)
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১৫, ২০১০
Leave a Reply