সম-অধিকার, সমান সুযোগ: সকলের উন্নতি
নারী দি—বস
দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রধান হলেন দুজন মহীয়সী নারী। তাঁরা পালাক্রমে সরকারি ও বিরোধী দলে অবস্থান করেন। ভাবতে ভালোই লাগে। বর্তমানে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও নারী। অনেকে বলতে পারেন তাহলে এ দেশে নারী দিবস পালনের প্রয়োজনীয়তা কী? আছে, জনাব আছে। কারণ আমাদের চারপাশে এমন অনেক আধুনিক পুরুষ আছেন যারা নিজেদেরই নারী ভেবে নিশ্চিন্তে বাসের মহিলা সিটে গিয়ে বসে থাকেন। প্রকৃত নারীরা এলেও তারা সিট ছেড়ে উঠতে চায় না। (প্রথম আলোর বদলে যাও, বদলে দাও বিজ্ঞাপন দ্রষ্টব্য) ভাবটা এমন, তাঁরাই প্রকৃত নারী, তাঁদের ‘আপা’ বা ‘ম্যাডাম’ সম্বোধন না করলে তাঁরা ভীষণ মাইন্ড করবেন! মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তাঁদের সিটের সঙ্গে এমনভাবে আটকে রাখে যে তাঁরা উঠতেই পারেন না!
নারীদের এমন মর্যাদা আর কোথাও দেয় কি না কে জানে। দেশের মানুষ আজ এসিডকে বিজ্ঞানচর্চার উপকরণ হিসেবে না নিয়ে ছুড়ছে নারীদের ওপর। অথচ এই পুরুষকেই স্নেহ, মায়া মমতা দিয়ে বড় করে তুলেছে নারী। এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা শিকার হচ্ছে কেবল নারী।সারা দিন নারী দিবসের সভা-সেমিনার করে বাসায় গিয়ে তরকারিতে লবণ কম কেন এই অজুহাতে স্ত্রীকে প্রহার করা পুরুষের সংখ্যাও নিতান্ত কম নয় এ দেশে। মননে আর মানসিকতায় এমন লোকেই আজ ভরে উঠছে দেশ। যত দ্রুত পুরুষদের এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটবে তত দ্রুতই আমরা একে অপরকে সহায়তা করে এগিয়ে যাব উন্নতির দিকে।‘পিটিয়ে তোর বাপের নাম ভুলিয়ে দেব।’ কূটতর্ক করতে গিয়েঅনেকে এ নিয়ে যুক্তি দেখায়, আরে দেশে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হইব, তাইলে শুধু বাপের নাম ভোলালে হবে? মায়েরও তো নাম আছে। ওটাও তো ভোলাতে হবে, নাকি!
আমরা যাতে এমন বাজে তর্কে মেতে না উঠি। আজ যে আপনি নিজেকে ‘মানুষ’ বলে দাবি করছেন তার পেছনের অবদানকে স্বীকার করতে চাইলে আমাদের সবাইকে বলতেই হবে, নারী দি—বস!
Leave a Reply