মানবজীবন বড়ই সমস্যাময়। সিএনজি অটোরিকশায় দরজা স্থাপন মানুষের সমস্যার তালিকায় এক নতুন সংযোজন। এর আগে চালকের আসনের দুই পাশে দরজা থাকলেও যাত্রীরা ছিলেন দরজামুক্ত। কিন্তু স্বাধীনচেতা বাঙালিদের যাত্রীস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে একটি বিশেষমহল। তাদের ষড়যন্ত্রমূলক উসকানিতে সম্প্রতি সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী আসনের দুই পাশে লাগানো হয়েছে লোহার গারদের মতো দরজা। আপাতদৃষ্টিতে এই দরজাকে মলম পার্টিসহ ছিনতাকারীদের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকে আশীর্বাদ ভাবলেও অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবলে তা আসলে অভিশাপ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এদের দমন করতে পারছে না, ফলে আমরা হয়ে পড়েছি লৌহকপাটের ভেতর অন্তরীণ। নগরায়ণের এই যুগে একটু মুক্ত হাওয়ার জন্য যখন মানুষ আঁকুপাঁকু করছে, তখন সিএনজি অটোরিকশায় লোহার গারদ লাগিয়ে মুক্ত হাওয়ার পথ রুদ্ধ করে এই জনপ্রিয় বাহনটিকে একটি চলমান খাঁচায় পরিণত করা হচ্ছে। অথচ যাত্রীরা কোনো ভয়ানক প্রাণী নয় যে তাদের খাঁচায় আটকে রাখতে হবে। তা ছাড়া রাস্তার ভিক্ষুক-ফেরিওয়ালাদের সঙ্গে যাত্রীদের যে আত্মিক সম্পর্ক, তাতেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই লৌহকপাট। কিছু কিনতে হলে এখন দরজা খুলে, পরখ করে তারপর কিনতে হবে। এতে অপচয় হবে শ্রম ও সময়ের। আর অপচয়কারী শয়তানের কেমন আত্মীয় তা সবারই জানা। রাস্তার বাতিগুলো বিকল থাকায় অন্ধকারে এমনিতেই বোঝা যায় না সিএনজিতে যাত্রী আছে কি না। আর দরজা থাকলে তো কিছুই বোঝা যাবে না। ‘ওই সিএনজি’ বলে চিত্কার দিয়ে বোকা বনতে হবে। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো, এই বাহনটি অত্যন্ত হালকা। সামান্য অসতর্কতার কারণে যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় এটি উল্টে গিয়ে যাত্রী-চালক একসঙ্গে আটকা পড়তে পারে। তাই, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৭, ২০০৯
Leave a Reply