আমার বন্ধু সদ্য ডাক্তারি পাস করেছে। সে বেচারা প্রেমে পড়ে হঠাৎ একদিন বিয়ে করে বসল। বাসাতেও জানাজানি হলো; কেউ খুব একটা আপত্তি করল না। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, সে বউ নিয়ে কোথায় উঠবে? একান্নবর্তী পরিবার, সে নিজেই থাকে ড্রইংরুমের সোফায়! গার্জেনরা বলল, ‘আলাদা বাসা নে।’ সেই সংগতি তার এই মুহূর্তে নেই! কী করা, অন্তত বাসর রাতটা তো করা চাই! শেষ পর্যন্ত সে নিজেই একটা বুদ্ধি বের করল! সে জন্ডিসের রোগী হিসেবে সাত দিনের জন্য এক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গেল! ওই হাসপাতালের ডাক্তার বন্ধুরা তাকে সাহায্য করল। সব ঠিক, বউ এসে থাকবে; জন্ডিস রোগীর সেবা তো দরকার!
তা অবশেষে সে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। নির্দিষ্ট কেবিনে বউও এসে হাজির। বেশ রোমান্টিক অবস্থা! হঠাৎ রাত ১০টায় তার মা আর দুই বোন এসে হাজির! তিনি কীভাবে কীভাবে খবর পেয়েছেন, তাঁর ছেলে সিরিয়াস জন্ডিস বাধিয়ে হসপিটালাইজড। এসেই হুলস্থুল লাগিয়ে দিলেন, ‘তোর এত খারাপ অবস্থা, আমাদের জানালি না···বউমা, তুমিও তো জানাতে পারতে। বিয়ে করেই ভুলে গেলি··· বউমা, তুমি বাড়ি যাও, নতুন বউয়ের হাসপাতালে থাকার দরকার নেই, আমরা আছি···’ সে রাত মা আর বোনদের সেবা নিয়েই আমার ডাক্তার বন্ধুকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তবে পরদিনই সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে। জন্ডিস রোগের ইতিহাসে ইতিপূর্বে এত দ্রুত কাউকে পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন বলে শোনা যায়নি।
ছোটন, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০০৯
Leave a Reply