ঘটনাটা আমাদের গ্রামের। যাকে নিয়ে এই ঘটনা, তার নাম রিয়াজউদ্দীন মুনশি। পৈতৃক সূত্রে প্রচুর পয়সার মালিক। কিন্তু মাথায় বুদ্ধি নেই এক ফোঁটা। তো, তার একবার শখ হলো বন্দুক কেনার। গ্রামের লোকও তাল দিল ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, তোমার একটা বন্দুক না থাকলে চলে?’ যা-ই হোক, বহু কাঠখড় পুড়িয়ে শেষ পর্যন্ত সে একটি বন্দুক কিনল। লাইসেন্স করল। কয়দিন গ্রামে বন্দুক নিয়ে ঘুরল। গ্রামবাসী জানল, মুনশি বন্দুক কিনেছে। শুধু গ্রামবাসী নয়, ডাকাতেরাও জানল এই ঘটনা! এবং যা হয় তা-ই হলো, এক রাতে ডাকাতেরা এসে তাকে আচ্ছামতো প্যাঁদিয়ে বন্দুকটা ছিনিয়ে নিয়ে গেল।
পাকিস্তান আমলের ঘটনা; সে সময় বন্দুক চুরি হওয়া মানে ভয়ংকর ব্যাপার, তার ওপর বন্দুক চলে গেছে ডাকাতদের হাতে! কী করা! পুলিশকে সে কী বোঝাবে? চটজলদি সে বাসায় একটা সিঁদ কাটল। চুরি যে হয়েছে বোঝাতে হবে না পুলিশকে! যথারীতি খবর পেয়ে পুলিশ এল। দেখল বাড়িতে সত্যিই সিঁদ কাটা! তার মানে চোর যে বন্দুক নিয়ে গেছে, তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই! কিন্তু··· দারোগা সাহেব মুনশিকে কাছে ডাকলেন, ‘মুনশি সাহেব, চোর সিঁদ কেটে আপনার বন্দুক নিয়ে গেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই··· কিন্তু আমাকে বোঝান, সিঁদ কাটার মাটি আপনার ঘরের ভেতর এল কী করে?’ বলাই বাহুল্য, মুনশি সাহেব সিঁদ কেটেছেন তাঁর ঘরের ভেতর থেকেই!
রায়হান, কুতুবপুর, ময়মনসিংহ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০০৯
Leave a Reply