১· সব সময় হাতে একটা কাগজ রাখুন
যাঁরা হাতে সব সময় একটা কাগজ বা কলম রাখেন, তাঁদের দেখলেই পিঁপড়ার কথা মনে পড়ে। মানে, পিঁপড়ার মতো পরিশ্রমী মনে হয়। তাই অফিসের সহকর্মীদের কাছে কাজের চাপ বোঝাতে হাতে কিছু কাগজ রাখুন। তবে, খবরের কাগজ হাতে নিয়ে হাঁটা ঠিক শোভন দেখাবে না। প্রাকৃতিক কর্ম সারতে খবরের কাগজের বহুল ব্যবহারের কথা শোনা যায়। অফিসের পাশাপাশি বাড়ির পরিবেশও ঠিক রাখতে চাইলে একগাদা কাগজের বোঁচকা বেঁধে বাসায় ফিরতে পারেন। আপনার পরিশ্রমী স্বভাব সম্পর্কে ঘরে-বাইরে কোথাও কারও কোনো সন্দেহ থাকবে না।
২· কম্পিউটারে ব্যস্ত থাকুন
কম্পিউটারে সারা দিন অকাজ করলেও বোঝা মুশকিল। চ্যাটিং বা ফেইসবুকে বুঁদ থাকলেও দেখে মনে হয়, এই লোক ছাড়া পুরো অফিস যেন অচল। তিনি অফিসে যোগ দেওয়ার আগে অফিস কীভাবে চলছিল সেটা নিয়ে গবেষণা করতে ইচ্ছে করে। অবশ্য এই ফাঁকিবাজিটা অফিসের কর্তার চোখে পড়তে বেশি দিন নাও লাগতে পারে। তার জন্য প্রস্তুত থাকুন। বমাল ধরা পড়লে কর্তাকে বোঝান, অফিসের জন্য দরকারি নতুন এক সফটওয়্যার নিজে নিজেই শেখার চেষ্টা করছিলেন। অফিসের টাকায় প্রশিক্ষণ না নিয়ে কত টাকা বাঁচিয়ে দিলেন!
৩· টেবিলে একটা পাহাড় বানান
অফিসের কর্তার টেবিল সব সময় পরিষ্কার থাকতে পারে, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অন্যদের টেবিল পরিষ্কার থাকা মানে তারা নিশ্চয়ই কোনো কাজ করে না। তাই টেবিলে ফাইল বা কাগজের স্তূপ বানিয়ে রাখুন। এটা নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার আয়োজনও করতে পারেন। কাউকে আপনার টেবিলের দিকে আসতে দেখলে ফাইলের পাহাড় থেকে কয়েকটি ফাইল নামিয়ে তন্ন তন্ন করে খোঁজার চেষ্টা করুন। কী খুঁজবেন সেটা আপনার ব্যাপার।
৪· মুখে একটা নেতিবাচক ভাব ফুটিয়ে তুলুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যস্ত লোকের মধ্যে সব সময় অধৈর্য আর বিরক্তির ভাব থাকে। তাই আপনার মধ্যেও এ ধরনের একটা ভাব ফুটিয়ে রাখুন। তাতে অফিসের কর্তার আর বুঝতে কোনো সমস্যা হবে না। অবশ্য তার আগে বিশেষজ্ঞদের কথাটা একটু জানিয়ে রাখতে পারেন।
৫· সবার শেষে অফিস ছাড়ুন
চেষ্টা করুন সবার শেষে অফিস থেকে বের হতে। বিশেষ করে কর্তা অফিসে থাকলে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে অফিস ত্যাগ করাই ভালো। এ সময়টা ম্যাগাজিন বা রগরগে কোনো থ্রিলার পড়ে কাটিয়ে দিতে পারেন। অফিস থেকে বের হওয়ার সময় কর্তাকে নিজের চেহারাটা একবার দেখাতে ভুলবেন না।
৬· ছুটির দিনটাও কাজে লাগান
গুরুত্বপূর্ণ অফিশিয়াল ই-মেইল অফিস সময়ের বাইরে পাঠান (যেমন, রাত নয়টা ৩৫ মিনিট বা সাতটা আট মিনিট)। মনে রাখবেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো এসব কাজের জন্য উত্তম। এতে অফিসের নির্ধারিত সময়ের পরও যে আপনি কাজ করেন তা প্রমাণিত হবে।
৭· মেঝেতে বই ছড়িয়ে রাখুন
টেবিলে কাগজ আর কাগজপত্র রাখার পাশাপাশি টেবিলের পাশের মেঝেতে কিছু বই ছড়িয়ে রাখুন। এ ক্ষেত্রে কম্পিউটারের নাদুসনুদুস ম্যানুয়াল বইগুলো উত্তম।
৮· কঠিন শব্দের ব্যবহার বাড়ান
মাঝেমধ্যে কম্পিউটার ম্যাগাজিন পড়ার চেষ্টা করুন। সেখান থেকে কঠিন ও জটিল শব্দগুলো বেছে নিয়ে মুখস্থ করে ফেলুন। কর্তা বা সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই শব্দগুলো উগরে দিন। নিশ্চিত থাকুন, আপনার কর্তা শব্দগুলোর অর্থ না বুঝলেও মুগ্ধ হবেনই।
৯· সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আপনার অফিসের কর্তাকে এই লেখাটা পড়তে দেবেন না। তাহলে সব মাঠে মারা যাবে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২৪, ২০০৯
Leave a Reply