অনেক দিন ধরে চুরি করতে না পারায় কালুর হাত-পা নিশপিশ করছিল। আগে যা বাজারের পাশের তেঁতুলগাছে উঠে মানুষকে ভয় দেখাত, এখন সেটাও হয় না। মানুষ আর আগের মতো ভয় পায় না। কেমন যেন চালাক হয়ে গেছে। এমন সময় কালুর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলল। আমার দূরসম্পর্কের এক মামা আছেন। নাম তোতা মামা। তিনি একটু বোকা আর ভীতু টাইপের। কালু তোতা মামাকে ডেকে এনে বলল, ‘তোতা, তেঁতুলগাছে যে একটা ভূত থাকে, তোর মনে আছে?’
‘মনে আছে তো।’ তোতা মামা বলল।
-কালকে রাতে আমারে তো প্রায় ধরেই ফেলছিল!
-বলো কী?
-আমারে কী বলল জানিস? ঘাড় মটকাব!
-বাপ রে!
-আমি সাহস করে জিজ্ঞেস করলাম, কার? কী বলল জানিস?
-না, জানি না।
-বলল, তোতার।
শুনে তোতা মামার মুখ চুপসে গেল।
-আরে ভয় পাইস না। আমি আছি না? জিজ্ঞেস করলাম কখন?
-কখন?
-আজকে রাতে।
-ওরে আল্লা! আমি গেছি!
-ভয় পাইস না। আমি আছি কী জন্য? তুই খালি আমার কথা শোন। তাহলে দেখবি কিছুই হবে না।
-কী শুনব?
-মোস্তফা ভাইজান তোর চাচাতো ভাই না?
-হুম।
-তুই আজকে রাতে মোস্তফা ভাইজানের খাটের নিচে লুকিয়ে থাকবি। তাহলে ভূত তোকে খুঁজে পাবে না।
-সত্যি কালু?
-হুম। আর যদি ভয় পাস তুই, সে জন্য আমিও আজকে তোর সঙ্গে থাকব। তুই খালি অর্ধেক রাতে দরজাটা খুলে দিবি। কাউকে বলিস না আবার। পারবি না?
-হুম, পারব।
সে রাতে কালু মনের সুখে তোতা মামার বাসায় চুরি করল।
উম্মে সালমা
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১০, ২০০৯
Leave a Reply