ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশের যাত্রীদের এক বিশাল অংশ এখনো প্রতিদিন রিকশায় চড়ে গন্তব্যে যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দূরত্ব অনুযায়ী রিকশা ভাড়া সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট হলেও কোনো রিকশাওয়ালাই তা মানছে না। ফলে নানাভাবেই তারা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া দাবি করে। নিরুপায় হয়ে যাত্রীরাও ওই ভাড়ায় যেতে বাধ্য হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে তারা অতিরিক্তি ভাড়া দাবি করে। যেমন, কোনো প্রেমিক-প্রেমিকা যদি রিকশায় ওঠে, রিকশাওয়ালা হাসিমুখে ২০ টাকা বেশি চাইবেই। প্রেমিকার সামনে প্রেস্টিজ ইস্যু হওয়ায় প্রেমিকও বাধ্য হয়ে ২০ টাকা বেশি দিচ্ছে। কিন্তু এটা একরকম জুলুম। রিকশাওয়ালারা অন্যের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে। এ ছাড়া বৃষ্টি হলে কিংবা কড়া রোদ উঠলে, ভ্যালেন্টাইনস ডে, ফ্রেন্ডশিপ ডে, ঈদের দিন-এই সব দিনের জন্য তারা যেন মুখিয়ে থাকে।
এ ছাড়া প্রায়ই ভাড়া নিয়ে রিকশাওয়ালা ও যাত্রীর মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা লেগে থাকে, যা রাস্তার স্বাভাবিক শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তোলে। এমন অনেক যাত্রীই আছে, যারা সবার সামনে রিকশাওয়ালার গালে একটা থাপড় বসিয়ে নিজের বীরত্ব জাহির করার সুযোগ হাতছাড়া করে না। এই সব ছোটখাটো কারণে অনেক সময় রাস্তায় তীব্র জ্যামের সৃষ্টি হয়।
তাই যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে রিকশায় মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মিটারের উৎস হিসেবে আমরা সিএনজিচালিত ট্যাক্সির মিটারগুলোই রিকশায় লাগানোর প্রস্তাব করছি। কারণ এখন দেশের কোনো সিএনজিচালিত ট্যাক্সি মিটারে চলে না। ফলে সেসবের মিটারগুলো একরকম অকাজেই পড়ে থাকে।
রিকশায় মিটার লাগালে যাত্রী ও রিকশাওয়ালা উভয় পক্ষই ভাড়া-সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে। এ ব্যাপারে শিগগিরই সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৩
Leave a Reply