খামের আঠা কি স্বাস্থ্যসম্মত?
এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে
ঘোড়ার ডাকের প্রচলন করেছিলেন শের শাহ (এর আগে ঘোড়ারা ডাকতে পারত না বলে প্রচলিত আছে)। আর নিঝুম রাতে হ্যারিকেন হাতে রানারের ছুটে চলার চিহ্নসংবলিত ডাক বিভাগের প্রচলনের ইতিহাস খুব একটা প্রাচীন না হওয়ারই কথা। আধুনিক (?) এই ডাক বিভাগের তত্ত্বাবধানে আঠাযুক্ত হলুদ খামের আবির্ভাবের ইতিহাসও তাই খুব একটা প্রাচীন নয়। আমাদের আজকের এই মহান রসকীয়র আলোচ্য বিষয়ও এই হলুদ খাম।
গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, খামের পেছনের ওপরের দিকে জনগণের সুবিধার্থে অগ্রিম আঠা লাগিয়ে দিয়েছে ডাক কর্তৃপক্ষ। জিহ্বা দিয়ে ভিজিয়ে সেটি জুড়ে দিতে হয়। সঠিকভাবে খামটি জুড়ে দেওয়ার জন্য সেই আঠা খুবই অপর্যাপ্ত। এর চেয়ে বড় কথা, সেখানে যে আঠা ব্যবহৃত হয়েছে, সেটি কি স্বাস্থ্যসম্মত? ডাক বিভাগ জেনেশুনে কিসে মুখ দিতে বাধ্য করছে আমাদের?
এমনিতেই আমাদের মাছে, ফলে, সবজিতে ফরমালিন; বাতাসে সিসা। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, অপরিষ্কার-অপিরচ্ছন্ন জায়গায় তৈরি হচ্ছে খাবার। এর ওপর মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে যদি সরকারি ডাক বিভাগও একই রাস্তায় হাঁটে, তবে সেটি অবশ্যই আতঙ্কের বিষয়। খামে ব্যবহৃত সেই আঠা ফুড গ্রেডেট কি না, বিএসটিআই অনুমোদিত কি না-এসব নিয়ে দেশের কোনো মহলেই কোনো আলোচনা নেই। জিভ দিয়ে সেই আঠা সিক্ত করতে গিয়ে সবাইকে কিছু না কিছু পরিমাণ আঠা খেতেই হচ্ছে। কিন্তু এর সুদূরপ্রসারী যে প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে কেউ বিচলিত নয়। এই আঠার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে হতে পারে যেকোনো মারাত্মক রোগ। তাই আসুন, আমরা নিজেরা সচেতন হই, ডাক কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এই আঠাকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ঘোষণা না করা পর্যন্ত জিভ না লাগিয়ে অন্য আঠা দিয়ে খাম জোড়া লাগাই। অন্তত শুকনো আঠা ভেজাতে পানি ব্যবহার করি। আশা করি, কর্তৃপক্ষ খামে স্বাস্থ্যসম্মত ফুড গ্রেডেট আঠা ব্যবহারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
সূত্রঃ প্রথম আলো, জুলাই ২০, ২০০৯
Leave a Reply