৪০ বছর আগে আজকের এই দিনে নিল আর্মস্ট্রংরা বেড়িয়ে এসেছেন চাঁদ মামার বাড়ি থেকে। আমরা আরও ৪০ বছর পরও মামার বাড়িতে বেড়াতে যেতে পারব না, কিন্তু তার পরও রস+আলোর পক্ষ থেকে চাঁদের বুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, চাঁদ থেকে তিনি বাংলাদেশকে চিনতে পারছেন। চাঁদ থেকে চাঁদের বুড়ি কী কী দেখে বাংলাদেশকে চিনতে পারলেন তা-ই জানাচ্ছেন শাত শামীম
মোবাইল ফোনের টাওয়ার
আইফেল টাওয়ার বানিয়ে কী বাহাদুরি করে ফ্রান্স, আর বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানিগুলো দেশের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত কয়েক হাজার টাওয়ার বানিয়ে চুপচাপ বসে আছে! কোনো ঢাকঢোল পেটানো নেই, অহংকার নেই। বুড়ি হয়ে গেছি তো, চোখে আগের মতো দেখতে পাই না। তার পরও দেখি, কী সুন্দর টাওয়ারের মাথায় একটা লাল বাত্তি জ্বলছে। এত লাল বাত্তি জ্বলা দেখলেই বোঝা যায় বাংলাদেশ ওইখানে!
সংসদ ভবন
মাঝখানে অনেক দিন এটা চোখে পড়েনি। এখন আবার লাইট জ্বলে, হালকা-পাতলা আওয়াজ আসে এখন, সুন্দর দেখতে পাই। চীনারা বলে, আমি নাকি কেবল গ্রেটওয়াল দেখতে পাই! ঢাহা মিথ্যা কথা। নিল আর্মস্ট্রং এসে আমাকে দুরবিন দিয়ে গেছে, আমার চোখে দুটি লেন্স বসিয়ে দিয়ে গেছে। যাক, শুনেছি এ ঘরটায় নাকি বড় নেতারা কথা বলে, গরিব একটা ছোট দেশে নেতাদের জন্য এমন একটা ঘর বুঝি আমার চোখে পড়বে না!
ভাঙা সেতু
শুকনা জায়গা লম্বা লম্বা সেতু, আবার কোথাও কোথাও অর্ধেক আছে অর্ধেক নাই। আবার কোথাও পুরো সেতু আছে কিন্তু আগা-গোড়া নাই, এমন অদ্ভুত সুন্দর জিনিস আর কোথাও দেখি না, সময় পাইলে আমারে একটু জানাইয়ো, এগুলা কেন এমন দেখতে।
বুড়িগঙ্গা
সারা পৃথিবী ঘুরে বেশির ভাগই তো দেখি শুধু পানি আর পানি। কিন্তু এমন কালো পানি আর কোথাও দেখি নাই। আমার ঘ্রাণশক্তি অত ভালো না, তার পরও এদিক দিয়া যাওয়ার সময় নাক-মুখ টিপ দিয়া যাইতে হয়।
পল্টন ময়দান
খোলা আকাশের নিচে প্রায় প্রতিদিন একই জায়গায় এত লোক কী করে, কেন জমা হয় আমার মাথায় ধরে না। প্রথম প্রথম ভাবছিলাম কোনো খেলাধুলা হয় বা সিনেমার শো দেখায়। কিন্তু না, আবহাওয়া ভালো থাকায় একবার ভালো করে তাকাইয়া দেখি একজন একটু উঁচুতে দাঁড়ায়ে কী বলছে। মজার কোনো জোকস হলে আমারে বলতে পারেন!
আবহাওয়া ভবন
নিল আর্মস্ট্রং, মাইকেল কলিন্স আর এডউইন অলড্রিন যখন এত কষ্ট করে আমাকে দেখতে এসেছে, তখন আমার সম্পর্কে অনেক গোপন কথা তাদের বলে দিয়েছি। এখন প্রায় সবাই এগুলো ধার করে শুনে অনেক কিছু আগে থেকেই জেনে যাচ্ছে। কিন্তু একটা ভবন আছে, যারা শুধু উল্টাপাল্টা বলে। দেখা গেল পরদিন থেকে কড়কড়া রোদ থাকবে, বলে কিনা ভারী বর্ষণ হবে। দেখলেই হাসি পায়!
সূত্রঃ প্রথম আলো, জুলাই ২০, ২০০৯
Leave a Reply