খাওয়া, ঘুম, নারীসঙ্গ আর ভাগ্য বিষয়ে জ্যোতিষীদের ওপর অগাধ বিশ্বাস-রাজা-বাদশাদের কারবার তো ছিল এমনই। প্রথা ভেঙে এর একটু বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেছিলেন ফ্রান্সের রাজা একাদশ লুই। উঁহু, ভুল ভাববেন না। প্রথম তিনটি জিনিসে একদমই তিনি প্রথা ভাঙার চেষ্টা করেননি। বিপ্লবী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কেবল জ্যোতিষশাস্ত্রের বেলায়। কিন্তু সেই বিপ্লবী মনোভাব হুমকির মুখে পড়ে, যখন রাজ্যের এক জ্যোতিষী রাজপরিবারের একজনের মৃত্যুর ব্যাপারে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করে সফল হয়।
ধর তক্তা মার পেরেক। রাজার সামনে হাজির করা হলো জ্যোতিষীকে। প্রজাদের মনে বিভ্রান্তি আর কুসংস্কার ছড়ানোর অপরাধে শাস্তি হবে তাঁর (জি, ঠিকই ধরেছেন, শাস্তি মানে গর্দান নামের জিনিসটা নেওয়ার কথাই বলা হচ্ছে)। রাজা মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা, তুমি তাহলে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পার। তা বল তো দেখি, তোমার কবে মৃত্যু হবে? জ্যোতিষীও কম সেয়ানা নয়, ‘জাঁহাপনা, আপনার মৃত্যুর ঠিক তিন দিন আগে আমার মৃত্যু হবে।’
তারপর আর কি! রাজা জনা বিশেক বৈদ্য-কবিরাজ নিয়োগ দিলেন জ্যোতিষীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য। আর জ্যোতিষীও ঘি-টি খেয়ে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাতে লাগলেন।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ২৯, ২০০৯
Leave a Reply