তার বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত রূপ-২১ মে ২০০৯। রাত ১১টা ১৫ মিনিট। বসে ছিলাম স্ব-উদ্ভাবিত টাইম মেশিনে। টাইপ করলাম ‘২১ মে ২০,০০৯, দিন ১১টা ১৫ মিনিট’।
সঙ্গে সঙ্গেই চোখে সরষে ফুল দেখলাম প্রচণ্ড ঝাঁকুনির চোটে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে। টাইম মেশিনসহ আমি তখন পার্কের মতো এক জায়গায় অবস্থান করছিলাম। বোতাম টিপে টাইম মেশিনকে হাওয়া করে দিলাম। রিমোট কন্ট্রোল রাখলাম পকেটে পুরে। স্বস্তির নিঃশ্বাস নেব, এমন সময় দেখি দুজন ফিনফিনে মিড়মিড়ে পুলিশ আমার স্কন্ধদেশে চাপ দিয়ে মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি ওপরে ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার ধারণা সত্যি হলো। এরা আসলে প্রতিরক্ষী রোবট।
আমাকে নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে গেল। সভা, সেমিনার সব হলো। কিন্তু কোনো মানুষের ‘ম’-ও কোথাও খুঁজে পেলাম না। এই পৃথিবী নামক গ্রহটাতে আর কোনো মানুষই অবশিষ্ট নেই।
সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, আমাকে চিড়িয়াখানায় রাখা হবে। তা-ই হলো।
দশনার্থীদের কেউ কেউ আমাকে খোঁচা মারে, কেউ বাদাম দেয়, কেউ কলা দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আশ্চর্য, এই রোবটদের ব্যবহার মানুষের চেয়ে ভিন্ন ধরে নেওয়ার কোনো উপায় নেই। এরা মনে হয় আমাকে বিরক্ত করে খুব মজা পাচ্ছে; আমরা যে রকম বানরকে বিরক্ত করি।
একদিন এদের সঙ্গে আমি যোগাযোগের চেষ্টা করলাম। বিশেষজ্ঞ টাইপ এক রোবটকে আমি বোঝালাম, ‘আমাকে সুযোগ দিলে আমি আমার দেশে ফিরে গিয়ে আরও কয়েকজন বন্ধু নিয়ে আসতে পারি। তবে কথা হলো, আমাকে এমন কিছু দিন, যা দেখে আমার বন্ধুরা বুঝতে পারবে যে ঠিকই আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম।’ একটু বুদ্ধি খাটিয়েছিলাম আর কি।
সিদ্ধান্ত হলো, আমাকে ১০ পিলোন (১ পিলোন = ১,২৩,৫৮০ ক্যারেট) হীরা দেওয়া হবে।
আর তাই তো আজ আমি বিল গেটসদের বিল গেটস-‘বেঙ্গলি বিলিয়নিয়ার।’
— সাজ্জাদ হোসেন
মকবুলার রহমান ছাত্রাবাস, পঞ্চগড়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০০৯
Leave a Reply