কলবেল বেজে উঠল। শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন ড· মুহম্মদ জাফর ইকবাল। দরজাটা খুলেই চমকে উঠলেন তিনি। এরা কারা! ভাবলেশহীন মুখে কয়েকটি এনরয়েড তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
‘আপনিই কি জাফর ইকবাল?’ অদ্ভুত স্বরে কথা বলে উঠল একটি এনরয়েড। না না এটা কোনো এনরয়েড না, এনরয়েডদের গলা এমন হয় না। এরা অবশ্যই এলিয়েন। বি্নিত এবং ততোধিক ভীত জাফর ইকবালের গলা দিয়ে কোনো স্বর বেরোল না। তিনি কেবল মাথা নাড়লেন।
‘আপনিই কি তবে আমাদের নিয়ে বই লেখেন? আচ্ছা, আপনি আমাদের ব্যাপারে কতটুকু জানেন? কিছুই জানেন না। অথচ আমাদের নিয়ে বেশ কিছু গল্প-উপন্যাস লিখেছেন।’
জাফর ইকবাল এবারও কোনো কথা বলতে পারলেন না। অন্য একটি এলিয়েন চেঁচানো স্বরে বলতে লাগল, মানুষেরা কোনো কিছু না জেনেই শুধু কল্পনা করে অনেক কিছু লিখে ফেলে। কিন্তু আমরা তো এটা পারি না। আমাদের গ্রহের ‘কষ+অন্ধকার’ ম্যাগাজিন সায়েন্স ফিকশনধর্মী লেখা চেয়েছে। আমরা ঠিক করেছি মানুষকে নিয়ে লিখব। তাই মানুষ সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। রিসার্চ করার জন্য আপনাকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাব।’
‘আমাকে!’ এবার চিঁ চিঁ স্বর বেরিয়ে এল জাফর ইকবালের গলা দিয়ে। ‘হ্যাঁ, আপনাকেই। চলুন আমাদের সঙ্গে।’ কিম্ভুত প্রাণীগুলো তাঁর হাত টানতে লাগল। কোনো বাধা দিতে পারলেন না তিনি।
হঠাৎ চিৎকার দিয়ে বিছানায় উঠে বসলেন ড· মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি ঘামছেন দরদর করে। ঘরের আলোটা জ্বেলে দিয়ে টেলিফোনের রিসিভারটা হাতে তুলে নিলেন। রস+আলোর লেখকদের এক্ষুনি সাবধান করতে হবে। তা না হলে ‘কষ+অন্ধকার’ ম্যাগাজিনের লেখকেরা না-জানি আবার কার স্বপ্নে হানা দেয়!
— তানভীর সিরাজ
স্টেশন রোড, জামালপুর।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০০৯
Leave a Reply