রিকি একটি টাইম মেশিন বানিয়েছে। সে এতে করে ভবিষ্যৎ পরিভ্রমণে যাবে ঠিক করেছে। সে একটা প্রাচীন বইয়ে পড়েছে যে ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবা জ্ঞানীর কাজ আর সে নিজেকে জ্ঞানী হিসেবে প্রমাণ করতে যেকোনো কিছু করতে পারে। তাই সে ভবিষ্যৎ পরিভ্রমণে যাওয়াই ঠিক করেছে।
রিকি টাইম মেশিনের ফর্মুলাটা এক বিজ্ঞানীর কাছ থেকে কিনেছে। সে বলেছে, এটি ফুল প্রুফ ফর্মুলা, কোনো খাদ নেই। রিকি তাই এটি মোটা দাম দিয়ে কিনেছে। এমনিতে সে যন্ত্রপাতির খুব বেশি জানে না, কিন্তু মাঝেমধ্যে ফর্মুলা জোগাড় করে এটা-ওটা বানিয়ে ফেলে।
সে তার টাইম মেশিনে ঢুকে মেশিনকে ১০০ বছর ভবিষ্যতে যাওয়ার কমান্ড দিল। মেশিনের দরজা বন্ধ করতেই তার ভীষণ শীত করতে লাগল। কিছুক্ষণ পর সে বাইরে বেরিয়ে এল। বাইরে এসে সে হতবাক হয়ে গেল। সে সত্যি সত্যি টাইম ট্রাভেল করে ফেলেছে, কিন্তু কিছুই বদলায়নি কেন? এমনকি মানুষগুলো পর্যন্ত একই আছে, কারণ সে জিটাকে দেখতে পাচ্ছে। জিটা রিকিকে দেখে কাছে এগিয়ে এল। তারপর বলল, ‘একি রিকি, অসময়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছ কেন! কাজে যাবে না?’ রিকি জবাবে বলল, ‘হাহ্ কাজ? আমি তো তোমাদের সময়ে অতিথি হয়ে এসেছি, এখানেও কাজ করব নাকি?’ জিটা ভাবল, রিকির মাথা আগেই একটু খারাপের মতো ছিল, এখন বুঝি পুরোপুরিই খারাপ হয়ে গেছে। একে ঘাঁটানো ঠিক হবে না। এর কথায় সায় দেওয়াই ভালো। তারপর বলল, ‘তুমি কি আমাকে সব খুলে বলবে? আমি তো ঘটনার কিছুই বুঝছি না।’ রিকি মনে মনে ভাবল, মানুষগুলো এখন কী বোকা হয়ে গেছে? তারপর বলল, ‘আরে, আমি একটি টাইম মেশিন বানিয়েছি। তারপর এতে চড়ে টাইম ট্রাভেল করে ৩৯০৪ সাল থেকে ৪০০৪ সালে চলে এসেছি।’ ‘ও, তাহলে এই কথা।’ জিটা মনে মনে ভাবল। তারপর রিকিকে বলল, ‘রিকি, তুমি কি আমাকে তোমার মেশিনটা দেখাবে? আমি তো একজন বিজ্ঞানী, জিনিসটা দেখতে পেলে খুব উপকার হতো।’ রিকি জিটাকে তার টাইম মেশিন দেখাতে রাজি হলো। তারপর সে তাকে তার মেশিনের কাছে নিয়ে গেল। জিটা আলমারির মতো চৌকো মেশিনটা দেখে হেসেই বাঁচে না। তারপর জিটা অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বলল, ‘রিকি, তুমি এবারও ফ্রিজে ঢুকে বসেছিলে। হা হা হা হা···’
রিকি খুব বিরক্ত হয়ে ভাবল, ‘ঘটনা কী? এ নিয়ে পর পর ছয়বার একই ঘটনা ঘটল। ওই ঠগবাজ বিজ্ঞানীটা নিশ্চয়ই আগেও আমার কাছে তার ফর্মুলা বিক্রি করেছে। তাই তো তাকে এত চেনা চেনা লাগছিল। আসুক, এরপর ওর টাইম মেশিনে করে ওকেই আমি ১০ হাজার বছর সামনে পাঠিয়ে দেব। হ্যাঁ···আমার নামও রিকি।’
— রিজন সরকার
পাবনা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০০৯
Leave a Reply