৩০০৯ সাল, ১ জানুয়ারি। এক কৃপণ বিজ্ঞানী একটি যুগান্তকারী ফর্মুলা আবিষ্কার করে ফেললেন। সময়কে এগিয়ে নেওয়া বা পিছিয়ে নেওয়ার ফর্মুলা। অর্থাৎ টাইম মেশিনের মূল ভিত্তি। কিন্তু তিনি খুশি হতে পারলেন না। কারণ, এটি বানাতে যে যে পার্টস দরকার, তা তাঁর খরচের সীমা অতিক্রম করবে। একদা তিনি শপথ করেছিলেন যে প্রতিদিন দুই ইউনিটের বেশি খরচ করা যাবে না। তাই তিনি টাইম মেশিনের এত কাছে গিয়েও দুই পা পিছিয়ে এলেন। কিন্তু হঠাৎ তাঁর মনে হলো, এটি বানালে হয়তো কোনো অ্যাওয়ার্ড এসে তাঁর জমানো ইউনিট আরও বাড়তে পারে। তিনি আর দেরি করলেন না। কিছু ধারদেনা করে বানিয়ে ফেললেন একটা টাইম মেশিন। একটি প্রথম প্রজাতির রোবট নিয়ে চেপে বসলেন টাইম মেশিনে। সেটিতে করে চলে এলেন ১৮০৯ সালে। তখন তাঁর দেশ সুজলা, সুফলা, ঐশ্বর্যপূর্ণ। দেশের মানুষও ছিল অতিথিপরায়ণ। তারা তাঁকে ভালো করে খাওয়াল। আম, জাম, মিষ্টি, দই, মধু কিছুই বাদ রাখল না। যখন ফেরার সময় এল, তখন তাঁর হাতে একটা বস্তা ধরিয়ে দিয়ে বলল যে এখানে তাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস আছে। বিজ্ঞানী ভাবলেন, মনে হয় প্রাচীন খনিজ সম্পদ হীরা-সোনাই হবে। তখন তো তাঁর খুশি আর ধরে না। তিনি ভাবলেন, এ সুযোগে ধনী হওয়ার সাধ পূর্ণ হয়ে গেল। রোবটটিকে নিয়ে আবার ফিরে এলেন ৩০০৯-এ। উজ্জ্বল মুখে বস্তা খুলে দেখলেন, কালো কালো হীরা জহরত(!), কিন্তু তা থেকে এত দুর্গন্ধ বের হওয়ায় তাঁর সন্দেহ হলো, রোবটের ডেটাবেইসে ‘এটা কী’ প্রশ্নটা প্রবেশ করাতেই হতচ্ছাড়া রোবটের বাচ্চা বলে উঠল, এটা নাকি গরু নামের এক প্রাচীন প্রাণীর বিষ্ঠা, যা ফসল উৎপাদনে ব্যবহৃত হতো। এটাই সেকালের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ!
শুনে আপন মনে বিড়বিড় করতে করতে বিজ্ঞানী মূর্ছা গেলেন।
— কাজী রাগীব ইশরাক
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০০৯
Leave a Reply