অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে স্কুলের বন্ধুদের সামনে ইজ্জত আর থাকছেই না। আমার তীব্র দাবির মুখে বাবা নতি স্বীকার করতে বাধ্য হন। বাসায় আসে একটা তৃতীয় প্রজাতির রোবট। বন্ধুদের কাছে আমার ইজ্জতটাও রক্ষা হয়। রোবটটার নাম রাখলাম জিমি। যাবতীয় ফরমায়েশ পালনে জিমির জুড়ি নেই। সারা দিন বন্ধুর মতো পাশে পাই। একদিন ঘটল এক দুর্ঘটনা। মা-বাবা বাসায় নেই। আমি বাগানের বেড়া মেরামত করছি। কিন্তু একটা পেরেক কোনোভাবেই আটকাতে পারছিলাম না। মেজাজটা হয়ে গেল খারাপ। জিমিকে ডেকে পেরেকটা আটকে দিতে বললাম। তার পাল্টা প্রশ্ন, কোথায় আটকাব? মেজাজ হয়ে গেল আরও খারাপ। বললাম, আমার মাথায়। আমাকে চরমভাবে বি্নিত করে জিমি হাতুড়ি আর পেরেক নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। আমি আতঙ্কে দৌড়াতে শুরু করলাম। হঠাৎ একটা ইটের টুকরায় পা আটকে পড়ে যাই। বিজয়ীর বেশে সামনে এসে দাঁড়ায় জিমি। এক হাতে হাতুড়ি আরেক হাতে পেরেক নিয়ে আমার দিকে ঝুঁকে আসে। আমি তীব্র চিৎকারে জ্ঞান হারাই। এ ঘটনার দুই দিনের মাথায় আমরা জিমিকে বিক্রি করে দিই। সেদিন ভাগ্য অতি সুপ্রসন্ন ছিল বলে বাবা বাসায় এসে আমার চিৎকার শুনে বাগানে আসেন এবং পেছন দিক থেকে জিমির সুইচটা বন্ধ করে দেন। সব সময় তো এমনটা নাও হতে পারে।
— মো· ফেরদৌস রাশেদ
মাধবদী, নরসিংদী।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০০৯
Leave a Reply