‘জব্বার, এক কাপ চা দাও তো।’ কথাটা বলেই ধীর পায়ে হাঁটতে লাগল সিডিসি। সিডিসির হাতে রস+আলোর ডিজিটাল সংখ্যা। প্লাস্টিকের পাতায় তৈরি রস+আলো পড়ে হাসছে সিডিসি। তবে হাসিটা বোঝা যাচ্ছে না। কারণ, ভিনগ্রহের মানুষের দাঁত নেই।
‘স্যার, আপনার চা।’ ঘরে ঢুকল জব্বার। রস+আলো বন্ধ করে জব্বারের দিকে তাকাল সিডিসি। তারপর বলল, ‘বাংলাদেশে মনুষ্য জাতির কতজন মানুষ আছে, বলতে পার?’ উত্তরে না-সূচক মাথা নাড়াল জব্বার। এবার সিডিসি বলল, ‘এই ডিজিটাল বাংলাদেশে মানুষকে কেমন যেন বেমানান মনে হয়। এটা তো আর ২০০৯ সাল না। এটা ২০২১ সাল। বাংলাদেশে এখন সবকিছুই ডিজিটাল। তোমাদের মতো মানুষ দিয়ে ডিজিটাল কর্ম সম্পাদন করা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তোমাকে ওই ভিনগ্রহে পাঠিয়ে দেব। ওখানেই এমন সব বাংলাদেশি বাস করে।’
ক্রিং ক্রিং ক্রিং। টেলিফোন বেজে উঠল। এগিয়ে গেল সিডিসি। তারপর রিসিভার কানে চেপে কী যেন বলল। জব্বার কিছুই বুঝতে পারল না।
২·
রাতের আঁধার আলো করে পৃথিবীতে নেমে এল একটা ভিনগ্রহের যান। তিনজন নেমে এল যান থেকে। এগিয়ে গেল সিডিসির বাড়ির দিকে। তারপর সিডিসির সঙ্গে পরামর্শ করে জব্বারকে পাঁজাকোলা করে তুলে যানের কাছে নিয়ে এল। তারপর যানের ভেতর ঢুকিয়ে দিল জব্বারকে। এবার সিডিসি এগিয়ে এসে বলল, ‘বুঝলে জব্বার, টেলিফোনে আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম এই বাংলাদেশে তুমিই একমাত্র মানুষ। আর সবাই এখন ভিনগ্রহবাসী। তাই চিন্তা করে দেখলাম তোমার এই দেশে থাকা ঠিক হচ্ছে না। তুমি ওই ভিনগ্রহে চলে যাও। ওখানেই সব বোকা বাংলাদেশি বাস করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ চালাতে হলে আমাদের মতো ভিনগ্রহবাসী দরকার।’
— মো· মাসুদ রানা
সান্তাহার, ইয়ার্ড কলোনি, বগুড়া
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০০৯
Leave a Reply