‘মোরগগুলোর কী খবর?’
‘তারা তো ডিম পাড়ছে।’
‘মোরগ কি ডিম পাড়ে?’
‘কেন নয়, আমার হাইব্রিড মোরগগুলো ডিম পাড়ে।’
‘তা, এই ডিমগুলোর সঙ্গে মুরগির ডিমের পার্থক্য কী?’
‘মুরগির ডিমে বাচ্চা হয়, কিন্তু মোরগের ডিমে বাচ্চা হয় না।’
কথা বলছিলাম বিজ্ঞানী তবারক মিয়ার সঙ্গে। আমার অদ্ভুত বন্ধু। অদ্ভুত কেন? তাহলে বলি, শুনুন। এই তো সেদিন আমার বাসায় এসেছিল বেল্টের পরিবর্তে চেইন দেওয়া শার্ট-প্যান্ট পরে।
তোমার প্যান্ট-শার্ট অন্য রকম লাগছে।
হ্যাঁ, এখন তো প্যান্টের কোমরেও চেইন লাগানো হয়েছে। ফলে দুটো সুবিধা হলোঃ এক· প্যান্ট-শার্টের সঙ্গে সরাসরি কানেক্টেড হয়ে গেল এবং দুই· শার্ট ইন করার বাড়তি ঝামেলাটুকু থাকল না।
তা বেল্ট পরা কি বাদ দিয়েছ?
না, বেল্ট দিয়ে তো অন্তর্বাস পরি।
কী, বেল্ট দিয়ে অন্তর্বাস পরো?
হ্যাঁ, ছিনতাই-রাহাজানির এই দুনিয়ায় কি কিছু রাখা যায়। তাই সবকিছু রাখি অন্তর্বাসের বিভিন্ন পকেটে। ফলে সেটা ভারী হয়ে যায়, তাই বেল্ট দিয়ে পরা।
জুতাগুলোও দেখছি অন্য রকম মনে হচ্ছে!
সেগুলোতে মোটর লাগানো হয়েছে। রিমোট কন্ট্রোল টিপ দিলেই চলতে শুরু করে। ততক্ষণে টেবিলে কফি দেওয়া হয়ে গেছে। আমি বললাম,
নাও, কফি খাও।
কফি আর কি, ক্যাফেইন তো। আমার কাছে ক্যাফেইন ট্যাবলেট আছে। ওটা খেয়ে নিলেই তো হয়। এক গ্লাস পানি দাও তো।
আমার কাছে এ ঘটনাটা ঠান্ডা পানি দিয়ে কফি খাওয়ার মতো মনে হলো। আমার হঠাৎ মনে পড়ল মশার কথা। কিছুদিন
আগে মশা মারার যন্ত্র বানানোর কথা বলেছিল। জিজ্ঞাসা করতেই জানাল, তার বাসার মশারা নাকি রক্ত খায় না। তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা হয়েছে।
তাহলে ওরা কী খায়?
ওদের জন্য স্পেশাল স্যুপ বানানো হয়েছে, যার স্বাদ মানুষের রক্তের মতো।
এতে তো দুধ দিয়ে সাপ পোষা হলো।
কিন্তু তুমি তো জীববৈচিত্র্যের একটা অংশ বাদ দিতে পার না।
তা যা বলেছ।
তা সমসাময়িক কিছু বানিয়েছ নাকি?
ভাত খাওয়ার জন্য একটা প্লেট বানিয়েছি।
প্লেট তো আমার বাসায়ও আছে। এ আবার নতুন কী?
ধরো ভাত খাচ্ছি। এ সময় ফোন এল। উঠে গেলাম রিসিভ করতে অথবা ভুল করে ল্যাবে ঢুকে গেলাম আর বের হতে ভুলে গেলাম। এমন পরিস্থিতিতে দেখা যাবে, ভাত ঠান্ডা হয়ে গেছে। এই প্লেট দিয়ে তুমি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খাবারটা গরম করে নিতে পারবে। চুলায় নেওয়ার বাড়তি ঝামেলাটুকু নেই।
অসাধারণ!
আমি এখন উঠি।
সেকি, আরেকটু বসো। ভালোই তো লাগছে।
কথা বলে আমরা কি তরঙ্গের যথেষ্ট অপচয় করিনি!
সে তো বটে। তা এই তরঙ্গ দিয়ে আর কী করা যেত?
চুলা জ্বালানো যেত। যেমন ধরো, আমি চুলার কাছে গিয়ে বলি, ‘জ্বলে ওঠো’। অমনি ফ্রিকোয়েন্সির কারণে তা জ্বলে ওঠে।
এই বলেই সে চলে গেল। বিদায়টুকুও নিল না। সম্ভবত তরঙ্গ বাঁচানোর জন্য।
— তারেকুল মজিদ
এমবিবিএস, চমেক।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০০৯
Leave a Reply