কাঁঠাল
কাউকে খোঁচা দেওয়া ও খোঁচা খাওয়ার জন্য উপযুক্ত বহিরাবরণের এ ফলটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল। এটি খাওয়ার আগে ভাঙতে হয়, তবে যেখানে-সেখানে ভাঙলে চলে না। এটি অন্যের মাথায় ভেঙে খেতে হয়। তবে হ্যাঁ, কাঁঠালটা কিন্তু পাকা হতে হবে। আর যদি পাকা না হয়, তাহলে সর্বশক্তি দিয়ে কাঁঠালের গায়ে কিল মারতে শুরু করুন। তারপর কিলিয়ে পাকানো কাঁঠাল অন্যের মাথায় ভেঙে আরামে খান।
আখ
কখনো খাওয়া, কখনো খাওয়ানো-কোনো কাজেই আখের জুড়ি নেই। খাওয়া বলতে আখের রস আর খাওয়ানো বলতে আখকে লাঠি হিসেবে ব্যবহার করে মার খাওয়ানোর কথা বলা হচ্ছে।
আম
কাঁঠালকে জাতীয় ফলের মর্যাদা দেওয়ায় মনঃক্ষুণ্ন ফল হচ্ছে আম। নিজেদের জাতীয় ফল দাবি করে তারা আন্দোলনেও নামে, কিন্তু কাঁঠালের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। সেই সব আন্দোলনকারী আহত আমদের আমরা ‘ল্যাংড়া’ আম নামে চিনি।
জাম
এটি এমন একটি ফল, যা খাওয়ার সময় খাবারের চেয়ে পোশাকের দিকে বেশি নজর দিতে হয়। নইলে জামের রঙে জামা রঙিন হতে সময় লাগবে না। উল্লেখ্য, রাস্তাঘাটের জ্যাম আর ফল জামের মধ্যে আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই।
কমলা
আপেলের মতো দেখতে হলেও কমলা কিন্তু ছুলে খেতে হয়। আর এর ছালেরও আছে বহুমুখী ব্যবহার। অন্যের চোখে কমলার ছালের রস ছিটানো, বাসে বমি বমি ভাব হওয়া যাত্রীর নাকে ধরা ইত্যাদি কাজের কাজি হচ্ছে এই কমলা।
কলা
বাংলার অন্যতম বিনোদনধর্মী একটি ফলের নাম কলা। কলার খোসায় আছাড় খেয়ে পড়া মানুষকে দেখে কত মানুষ যে কত মজা পেয়েছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
লিচু
ব্যতিক্রমী এ ফল শ হিসাবে বিক্রি হয়। তবে গুনে না নিলে বাসায় যাওয়ার পর ১০০ ফলের জায়গায় কতটি পাবেন তা বলা মুশকিল। আর এসব লিচুচোরের কর্মকাণ্ডে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘লিচু-চোর’ নামে একটি কবিতা লিখেছিলেন।
বেল
এটি এমন একটি ফল, যেটি পাকলে কাকের কিছু যায় আসে না। এই যে কথায় বলে, ‘গাছে বেল পাকিলে তাতে কাকের কী!’ টাক মাথার লোকদের জন্য ভয়াবহ এক বিভীষিকার নাম এই বেল। জানেন তো, ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়।
লেখাঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২৫, ২০০৯
Leave a Reply