কুমির আর শিয়াল মিলে চাষ করতে গেল। কিসের চাষ করবে? আলুর চাষ। আলু হয় মাটির নিচে, আর গাছ থাকে মাটির ওপরে। তা দিয়ে কোনো কাজ হয় না। বোকা কুমির সে কথা জানত না। তাই সে শিয়ালকে ঠকানোর জন্য বলল, গাছের আগার দিক আমার আর গোড়ার দিক তোমার।
শুনে শিয়াল হেসে বলল, আচ্ছা, তা-ই হবে।
তারপর যখন আলু হলো, কুমির তখন সব গাছের আগা কেটে তার বাড়িতে নিয়ে এল। এনে দেখে তাতে একটাও আলু নেই। তখন সে মাঠে গিয়ে দেখল, শিয়াল মাটি খুঁড়ে সব আলু তুলে নিয়ে গেছে। কুমির ভাবল, তাই তো! এবার বড্ড ঠকে গিয়েছি। আচ্ছা, আসছে বার দেখব।
তারপর হলো ধানের চাষ। এবার কুমির মনে মনে ভাবল, আর কিছুতেই ঠকা যাবে না। তাই সে আগে থেকেই শিয়ালকে বলল, ভাই, এবার কিন্তু আমি আগার দিক নেব না, এবার আমাকে গোড়ার দিক দিতে হবে।
যখন ধান হলো, শিয়াল সে ধানসুদ্ধ গাছের আগা কেটে নিয়ে গেল। কুমির তো এবার ভারি খুশি! ভেবেছে, মাটি খুঁড়ে সব ধান তুলে নেবে। ও কপাল! মাটি খুঁড়ে দেখে কিছু নেই! লাভের মধ্যে খড়গুলো গেল।
তখন কুমির তো বড্ড চটেছে আর বলছে, দাঁড়াও শিয়াল বাছা, তোমাকে দেখাচ্ছি। এবার আর আমি তোমাকে আগা নিতে দেব না। সব আগা আমি নিয়ে আসব। সেবার হলো আখের চাষ।
কুমির তো আগেই বলেছে, এবার আর সে আগা না নিয়ে ছাড়বে না। কাজেই সে শিয়ালকে গোড়া নিতে বলল। আখ হওয়ার পর শিয়াল তাকে আগাগুলো দিয়ে নিজে আখগুলো নিয়ে ঘরে বসে মজা করে খেতে লাগল।
কুমির আখের আগা ঘরে এনে চিবিয়ে দেখল, খালি নোনতা, তাতে একটুও মিষ্টি নেই।
তখন সে রাগ করে আগাগুলো ফেলে দিয়ে শিয়ালকে বলল, না ভাই, তোমার সঙ্গে আর আমি চাষ করতে যাব না, তুমি বড্ড ঠকাও!’
— সংগ্রহেঃ নাদিয়া নাসরিন নাবিক কলোনি, চট্টগ্রাম
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২০, ২০০৯
Leave a Reply