২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি বিডিআর হামলা-সবকিছু শেষেই এফবিআই, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড এসে তদন্ত করে যায় কিন্তু কী প্রতিবেদন দেয়, সেটা আর জানা যায় না! ইউরোপ-আমেরিকায়ও বোমা হামলা হয়, তখন যদি বাংলাদেশ থেকে তদন্তের জন্য গোয়েন্দা নেওয়া হয়, তবে কী ধরনের প্রতিবেদন দেবেন তাঁরা, এর কাল্পনিক রূপ তুলে ধরছেন শাত শামীম
শুরুতেই বলে রাখছি, আমাদের তিন সদস্যবিশিষ্ট গ্রুপে কেউই ওঊখঞঝ করিনি। অতএব স্থানীয় কর্মকর্তারা যে যা-ই বলুক আমরা আকারে-ইঙ্গিতে আমাদের মতো করে বুঝে নিয়েছি। বাংলাদেশে বসেই যখন এ ঘটনার কথা শুনতে পেলাম, তখনই বুঝতে পেরেছিলাম এর সঙ্গে বিরোধী দলের সম্পৃক্ততা আছে! এসে যে আলামত দেখলাম, তাতেও মনে হলো ঘটনার সঙ্গে বিরোধী দলের সম্পৃক্ততা আছে। তবে কিছু আলামত দেখে মনে হচ্ছে, ঘটনার সঙ্গে আরব দেশীয় কোনো জঙ্গির সম্পৃক্ততাও থাকতে পারে। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা বেশ কিছু চুলজাতীয় জিনিস পাই। এতে মনে হয়, হামলাকারীদের কেউ নারীও থাকতে পারে। যেহেতু চুলের রং নিয়ে আমার সহকর্মীরা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন, তাই আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছি না। পড়ে থাকা চুলগুলো কি হামলাকারীর, না হামলায় নিহত কারও, নাকি হামলার পর বাতাসে উড়ে এসেছে, সেটাও আমরা বলতে পারছি না। এগুলো দীর্ঘ গবেষণার বিষয়। এগুলোর মীমাংসা করে প্রতিবেদন দিতে হলে অনুগ্রহ করে আমাদের ভিসার মেয়াদ বছরখানেক বাড়াতে হবে।
এই হামলাটি সরকার নিজে করেই অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দিতে চাইছে কি না, এ বিষয়টি আমরা একদম উড়িয়ে দিচ্ছি। কোনোভাবেই সরকারের কারও এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। অন্তত যে সম্মান করে আমাদের ডেকে এনে খাইয়েছে, তাতে মনে হয়, তাদের এমন মন থাকতেই পারে না। ভাববেন না নুন খেয়ে গুণ গাইছি!
সন্দেহ করে যাঁকে আটক করা হয়েছে, আমরা তাঁর সঙ্গেও কথা বলেছি। কথা বলে যতটুকু বুঝেছি, তাঁর একটা বড় শপিং মল আছে, সেখানে তিনি আমাদের যত খুশি তত ফ্রি কেনাকাটার দাওয়াত দিয়েছেন। যাঁর মন এত বড়, তিনি কোনোভাবেই এ রকম হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন না। তাঁকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া উচিত। তাঁকে যতক্ষণ আটকে রাখা হবে, ততক্ষণই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে!
হামলায় যে ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর আলামত দেখে আমরা নিশ্চিত, ইউরোপ-আমেরিকায়ও আজকাল দুই নম্বর জিনিস তৈরি হয়। অথবা বোমাগুলো আমাদের জিনজিরার মতো নকল জিনিস তৈরির কোনো কারখানা থেকে এসেছে।
এই প্রতিবেদন লেখার আগে আমরা বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। লোকটার কথাবার্তাও সন্দেহজনক। আমরা আশা করেছিলাম, তিনি ভদ্রতাবশত হলেও আমাদের বিমান ভাড়ার টাকাটা উপহার দেবেন। কিন্তু এই লোক বিরাট কঞ্জুস। সুতরাং এ রকম লোকের পক্ষেই এ ঘটনা ঘটানো একদম সম্ভব। আশা করি, আমরা এ দেশ ত্যাগ করার পরপরই তাঁর বিচারকাজ শুরু হবে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২৩, ২০০৯
Leave a Reply