নতুন চাকরির আবেদনে সংযুক্তি হিসেবে নানা ধরনের সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। তেমনি প্রেম শুরুর আগেও সংযুক্তি হিসেবে লাগতে পারে এসব সার্টিফিকেট। ভেবেছেন রাকিব কিশোর।
আমি এই মর্মে প্রত্যয়ন করিতেছি যে, এই ভাইজান আমার দোকান থেইকা নিয়মিত নিজের নাম্বার ছাড়াও অন্য একটা নাম্বারে ফ্লেক্সিলোড করত। টাকা-পয়সার ব্যাপারে উনি এক্কেরা দিলখোলা। যেই আপারে উনি ফ্লেক্সিলোড করত, সেই আপা ছিল খরচের ব্যাপারে উদার। তয় গত তিন মাস হইল ভাইজান কোনো ফ্লেক্সিলোড করতাছে না। কাহিনীডা বুঝবার পারতাছি না। তাই আমি গ্যারান্টি দিতে পারি, যিনি এই ভাইজানের সাথে প্রেম করবেন তার মোবাইলের ব্যালেন্স নিয়া চিন্তা করতে হইব না।
মানিক
ফ্লেক্সিলোডের দোকানদার
নতুন কোনো ছবি আইলেই হইল, ভাইসাব এক ছবি অন্তত চাইরবার দেখত। সঙ্গে একজন আফা থাকত। ভাইসাবের সঙ্গে আমার একটা চুক্তি আছে, ভাইসাব কখনো টিকিট কাটত না, হলে ঢোকার সময় আমার হাতে কিছুমিছু ধরাইয়া দিত। কিন্তু ইদানীং ভাইসাবের কী হইল, কিছু বুঝবার পারতাছি না। তিন মাসের মতো হইল ভাইসাবের ছায়াও দেখি না। তয় গ্যারান্টি দিয়া কইতাছি, ভাইজানের লগে প্রেম করলে তার সিনেমা দেখা নিয়া প্রব্লেম হইব না।
মুকুল মিয়া
টিকিট চেকার
সুপারস্টার সিনেপ্লেক্স
ছাড়পত্র
দীর্ঘদিন প্রেম করলেও প্রায় তিন মাস আমার সঙ্গে ওর কোনো সম্পর্ক নেই। এমতাবস্থায় ও যেকোনো মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতে পারে, আমার তরফ থেকে কোনো প্রকারের আপত্তি নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ওর সাবেক প্রেমিকা
আমি ‘চ্যাং খাই ব্যাঙ খাই’ রেস্টুরেন্টের ওয়েটার। এই ভদ্রলোককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। প্রথম দিকে টিপসের টাকা, খাবারের বিল নিয়ে খ্যাঁচখ্যাঁচ করলেও আস্তে আস্তে তিনি অভ্যস্ত হয়ে যান। তিনি নিয়মিত একজন ইয়ং লেডিকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে আসতেন এবং ওই লেডির পছন্দসই খাবারের অর্ডার দিতেন। তিনি ওই লেডির মুখের ওপর কখনো কোনো কিছুতে ‘না’ বলতেন না। তবে মাস তিনেক হলো তিনি রেস্টুরেন্টে পদধূলি দেন না।
আবু চিয়াং ফু, ওয়েটার
চ্যাং খাই ব্যাঙ খাই রেস্টুরেন্ট
উপরিউক্ত সংযুক্তিপত্রসমূহ পাঠ করিলেই তুমি অনুধাবন করিতে পারিবে যে, প্রেমিক হিসেবে আমি এ+ ক্যাটাগরির এবং বিগত তিন মাস পুরোপুরি ফাঁকা রহিয়াছি।
অতএব, তোমার সমীপে আমার আকুল আবেদন এই যে, উপরিউক্ত সংযুক্তিপত্রসমূহ যাচাই-বাছাইকরত: আমাকে তোমার প্রেমিক হিসেবে অনুমোদন প্রদানে সুআজ্ঞা হয়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০৯, ২০০৯
Leave a Reply