খেলায় নামার আগে
রস+আলোঃ দলের পারফরমেন্স নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
অধিনায়কঃ পুরোপুরি সেটিসফাইড। বিশ্ব মানের যেকোনো দলের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত আমরা।
(আমার নিজের যা পারফরমেন্স, তাতে বাকি সবাইকে তো ফিটই বলা যায়। বিশ্বমান তো দূরে থাক, পাড়ার টিমের সঙ্গে পেরে উঠি কি না?)
রআঃ পরের সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দল কেমন করবে বলে মনে হয়?
অধিনায়কঃ নিঃসন্দেহে ভালো করব। আমরা মাঠে নামব সিরিজ জিততে।
(সিরিজ জেতা দূরে থাক, অস্ট্রেলিয়ার নাম শুনলেই মনে হয় কেন শুধু শুধু দুই দল রোদে পুড়ে কষ্ট করি।)
রআঃ দলের কোন দিকটা বেশি ভালো মনে হচ্ছে, ব্যাটিং না বোলিং?
অধিনায়কঃ আমাদের বর্তমান দলটা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ব্যালেন্সড টিম। ব্যাটিং, বোলিং দুটোই আমাদের খুব ভালো হবে।
(এটাই ইতিহাসের সবচেয়ে নড়বড়ে টিম। ব্যাটিং-বোলিং কোনোটিতেই এখনো ভরসা করার মতো কেউ নেই। শুধু সবার মোবাইলে এখনো ব্যালেন্সটা ঠিক আছে বলেই বলেছি ব্যালেন্সড টিম।)
রআঃ ব্যাটিং, বোলিংয়ে নতুন কোনো চেঞ্জ কিংবা চমক থাকবে কি?
অধিনায়কঃ হ্যাঁ, চেঞ্জ তো থাকবেই। ছোটখাটো দু-একটা পরিবর্তন হয়তো হবে। আর আমি তো মনে করি, আমাদের সবার যে কেউ যেকোনো সময় চমক দেখানোর ক্ষমতা রাখে।
(দিন-রাত নিজের চেঞ্জের আশঙ্কা কইরা কূল পাই না। আমি যে এখনো অধিনায়ক আছি এটাই তো সবচেয়ে বড় চমক।)
খেলায় হারার পরে
রআঃ দলের পারফরমেন্সকে এখন কীভাবে দেখেন?
অধিনায়কঃ আমি মনে করি, আমরা উন্নতি করেছি।
(আমি ছাড়া সবাই ভালো করেছে। ওদের উন্নতি দেখে নিজের আসন নিয়ে আমি শঙ্কিত।)
রআঃ ব্যাটিংয়ের সমস্যা তো গেল না?
অধিনায়কঃ এটা আসলে পিচ কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করে। ওরা যে কন্ডিশনে খেলে আমরা ওই কন্ডিশনে খেলে অভ্যস্ত না।
(আসল কথা হলো, অধিনায়ক হিসেবে ডান ও বাম হাতের পাশাপাশি অজুহাত হচ্ছে, আমার সবচেয়ে বেশি উপকারী হাত।)
রআঃ দলের বোলিং নিয়ে কী ভাবছেন?
অধিনায়কঃ আমি তো মনে করি বোলিং অনেক ইমপ্রুভ করেছে।
(আগে ৫০ ওভার বল করতে হলেও এখন পরে ব্যাটিং করলে বিপক্ষ দলের জিততে ৫০ ওভার লাগে না।)
রআঃ দল কি আরও ভালো করতে পারত?
অধিনায়কঃ হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই। আমরা আমাদের সাধ্যমতো খেলেছি। কিন্তু তার পরও হয়তো আরও ভালো খেলতে পারতাম।
(যান-প্রাণ দিয়ে যতটুকু খেলেছি তাতেই শরীর দিয়ে চিকন ঘাম ছুটে গেছে। এর চেয়ে ভালো কীভাবে খেলব?)
রআঃ ফিল্ডিংয়ে তো অনেক সমস্যা। কয়েকটা ভালো ক্যাচ মিস হয়ে গেছে। এমনটা কেন হলো?
অধিনায়কঃ ক্যাচ মিস হয়েছে এটা আমি বলতে চাই না। আসলে ওগুলো ছিল অনেক দুঃসাধ্য ক্যাচ। ধরতে পারলে নিঃসন্দেহে ভালো হতো।
(এত কাছ থেকে ওদের ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখে আমরা এতটাই মুগ্ধ ছিলাম যে কখন ক্যাচ উঠেছে টেরই পাইনি।)
রআঃ দলের ধারাবাহিকতা নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠছে, সেগুলোকে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
অধিনায়কঃ দেখুন, ক্রিকেটই হচ্ছে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। দুর্ঘটনা তো ঘটতেই পারে।
(অস্ট্রেলিয়া জিতবে এটাই তো ঘটনা, হারলে ওটা হতো দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা নিশ্চয় কারও কাম্য নয়?)
রআঃ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী ঠিক করেছেন?
অধিনায়কঃ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলেছি এটাই অনেক কিছু। সামনে বিদেশের মাটিতে সিরিজ আছে বেশ কয়েকটা। আশা করি এখানকার ছোটখাটো ভুলগুলো শুধরে নিয়ে সেখানে কাজে লাগাব।
(আপাতত আত্মীয়স্বজনের বাজারের লিস্ট তৈরি নিয়ে ব্যস্ত আছি। ফাউ খরচে বিদেশভ্রমণে যাব এই খুশিতেই বাঁচি না! শেখাশেখির সময় কই?)
রআঃ আপনাকে ধন্যবাদ।
অধিনায়কঃ আপনাকেও। আমাদের জন্য দর্শকদের দোয়া করতে বলবেন।
(এই সাংবাদিক প্রজাতিটাই যদি পৃথিবীতে না থাকত, সবকিছু কত সহজ হয়ে যেত। দোয়া করার দরকার নেই, খালি গালাগালি না করলেই চলবে।)
সুমাইয়া মুনতাহা, উপশহর, রাজশাহী
সূত্রঃ প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৯, ২০০৮
Leave a Reply