দৈনিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকার কল্যাণে প্রতিদিনই তারকাদের নানান রকম সাক্ষাৎকার পড়তে হয় আমাদের। সেসব সাক্ষাৎকারে অনেক গতানুগতিক প্রশ্নের অতি পরিচিত কিছু উত্তর দিয়ে থাকেন তারকারা। তারা যা বলেন আর এর বিপরীতে তাদের মনে কি থাকে সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রামের মিল্টন খন্দকার।
রস+আলোঃ আচ্ছা, ইদানীং আপনাকে টিভিতে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না যে!
তারকাঃ আসলে আমি এখন অনেক বেছে বেছে কাজ করছি। আগের মতো হুটহাট করে স্ক্রিপ্ট না দেখেই সাইন করে ফেলি না। অনেকেই আসেন নানা অফার নিয়ে, কিন্তু স্ক্রিপ্ট তেমন পছন্দ হচ্ছে না। এছাড়া সামনে পরীক্ষার কারনে পড়াশোনা নিয়েই একটু বেশি ব্যস্ত।
(পরীক্ষা না ছাই। কেউ আমাকে কাজের জন্য না ডাকলে কি করবো। আর এখনকার নাটকে কি কোন স্ক্রিপ্ট থাকে নাকি? পর্দায় মুখ দেখানোটাই আসল।)
রআঃ ওহ! তা জানতে চাইছি, আপনার কয়টা কাজ দর্শক ভালোভাবে নিয়েছে, ব্যবসাসফল হয়েছে বলে মনে করেন?
তারকাঃ ওভাবে তো সঠিক সংখ্যাটা বলতে পারব না। তবে সংখ্যাটা অনেক। আমার তো সব কাজই ব্যবসাসফল। হলে সিনেমা একদিন চললেও সেটা ছিলো হাউজফুল।
(অমুক প্রযোজক আঙ্কেল তো আমাকে নায়িকা করে এখন পথের ফকির।)
রআঃ তা আপনি এ জগতে এলেন কীভাবে? মানে শুরুটা হয়েছিল কীভাবে?
তারকাঃ আমার এক আঙ্কেল একদিন বাসায় আমাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে কাজের অফার করে বসলেন!
(মুগ্ধ না ছাই, আমি নিজেই উনাকে যে পরিমাণ ফোন করেছি তাতে উনি বিরক্ত হয়ে একদিন আমাকে ডেকেছিলেন।)
রআঃ আপনার শুরুটা কীভাবে?
তারকাঃ আমি আসলে ছোট বেলা থেকেই একটা সাংস্কৃতিক আবহে বড় হয়েছি। বাফায় ক্লাসিকাল নৃত্য শিখেছি ছয় মাস, অমুক ওস্তাদের কাছে গান শিখেছি এক মাস। নতুন কুঁড়িতে অংশ নিয়েছি।
(হিন্দি সিনেমা ছোটবেলা থেকেই ছিলো আমার প্রাণ।)
রআঃ তা চরিত্রের প্রয়োজনে আপনি কতটুকু খোলামেলা হতে রাজি আছেন?
তারকাঃ দেখুন, সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে যদি আমাকে খোলামেলা দেখানোর প্রয়োজন হয়, আমি হব। এটা আসলে ডিপেন্ড করে পরিচালক কে, গল্প কী, কতটুকু খোলামেলা হতে হবে এসবের ওপর।
(সত্যজিৎ বলে কোনো কথা নয়, পারিশ্রমিক দিলে খোলামেলা হতে অসুবিধা কই?)
রআঃ বিয়ে করবেন কবে?
তারকাঃ ওমা, আমিতো এখনো বাচ্চা? এখনই ওসব নিয়ে ভাবছি না।
(বিয়ের কথা বলে কেন কষ্ট দিচ্ছেন। বিয়ে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই তো দিনের পুরোটাই যায়। শুধু বিয়ে করলে ডিমান্ড থাকবে না এই ভয়ে বিয়ে করতে পারছি না।)
রআঃ বিয়ে যখন করবেন তখন কি এ লাইনের কাউকে করবেন?
তারকাঃ আমি চাই আমার স্বামী হবে অনেক কেয়ারিং, দায়িত্বশীল-আমাকে যেন বুঝতে পারে। এ জগতের হলে তো সমস্যা নেই।
(যে জগতেরই হোক না কেন টাকাওলা হতে হবে।)
রআঃ নতুন উঠতি নায়ক খান্না খানের সঙ্গে আপনাকে নিয়ে কীসব গুজব চলছে, এর কতটা সত্যি?
তারকাঃ পুরোটাই মিথ্যা, বানোয়াট। আসলে আমাদের দুজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্বকে হিংসা করে ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন এসব ছড়াচ্ছে।
(ভাই, দিলেন তো কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা। ওই বদ নায়কের নামটা শুনলেই আমার গা জ্বলে। ও একটা ঠগ, প্রতারক, বিশ্বাস করে ঠকেছি।)
রআঃ কার সঙ্গে কাজ করতে পারলে ধন্য মনে করতেন?
তারকাঃ আমি তো প্রতিদিনই ভাবি একদিন আমির খান, শাহরুখ খান, হৃত্বিকের সঙ্গে অভিনয় করব। এ ছাড়া হলিউডের ব্রাডপিট, টম ক্রুজকেও সহঅভিনেতা হিসেবে ভাবতে ভালো লাগে।
(দেশীয় ভুঁড়িওয়ালা নায়কের পাশে মূল নায়িকা হিসেবে একটা চান্স পেলেই আপাতত বাঁচি, হলিউড-বলিউড তো স্বপ্নেও দেখি না।)
রআঃ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
তারকাঃ আপনাকেও ধন্যবাদ। ঠিকমতো সময় দিতে পারিনি বলে মনে কিছু নিয়েন না।
(বড় বাঁচা বাঁচালেন ভাই, এই আকালের দিনে একটা ইন্টারভিউ ছাপবেন! ঠিকমতো সময় কী, আপনি চাইলে পুরো সপ্তাহ ধরে ইন্টারভিউ দিতাম।)
সূত্রঃ প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৯, ২০০৮
Leave a Reply