নতুন বছর শুরু হলো··· নতুন সরকার আসছে··· সবকিছুই নতুন। নতুন তালিকায় নতুন ভোটাররা ভোট দিল। প্রায় দুই কোটি নতুন ভোটার··· তারাই বদলে দিল দেশের সিনারিও··· রাজাকারদের বিদায়পর্ব মোটামুটি সম্পন্ন।
শুধু একটা জিনিসই পুরোনো রয়ে গেল।
কোনটা?
খালেদা জিয়ার বক্তব্য।
মানে?
ওই যে ‘প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করলাম···’ এ তো খুবই কমন পুরোনো বক্তব্য। হারলেই মানুষ এমন বক্তব্য দেয়।
তাঁর কাছে নতুন কোনো বক্তব্য আশা করেছিলাম। এক আড্ডায় কথা হচ্ছিল। একজন মন্তব্য করল।
আসলে এটা সত্যি। এবার চমৎকার একটা নির্বাচন হলো। সেই ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মতো। সব নির্বাচনেই কিছু জোক তৈরি হয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। তার একটা এ রকম-
ভোটকেন্দ্রে এক লোক হাইমাউ কাঁদছে।
কী হলো, ভাই? কাঁদছেন কেন?
এক সাংবাদিক ছুটে এল। ‘আপনার সমস্যা কী?’
ভাইরে, ভোট দিতে পারলাম না।
কেন? এসে দেখি আমার ভোটটা আমার বাবা দিয়ে দিয়েছে।
মানে? এটা কী বলছেন? এবার তো এটা হওয়ার কথা না। সবার আইডি কার্ড আছে··· ছবি আছে।
ভাইরে, ইইই (কান্না), বাবা ভোট দিয়ে গেছে, তাতে আমার আফসোস নেই··· বাবা আর আমি এক দলই করতাম। ভোট ঠিক জায়গাতেই পড়েছে। কিন্তু আমি অন্য কারণে কাঁদছি।
কী কারণ?
বাবার সঙ্গে দেখা হলো না। আর ১০ মিনিট আগে আসলে দেখা হয়ে যেত।
এটা কেমন কথা, বাবার সঙ্গে দেখা ভোটকেন্দ্রে কেন করতে হবে? বাসায় করলেই হয়।
সেখানেই তো সমস্যা রে ভাই। বাবা তো ১০ বছর আগেই ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেছেন··· ইইই···।
তবে এটা নেহাতই একটা জোক। এবার এমনটা শোনা যায়নি যে একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে ফেলেছে। ছবি সংবলিত ভোটার তালিকা থাকায় সে সুযোগ এবার ছিল না। বিদেশি পর্যবেক্ষকেরাও সেটা স্বীকার করেছেন। এবার আমরা অপেক্ষা করছি নতুন সরকার আমাদের জন্য নতুন কী করে।
খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে একজন বলল, ‘তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী না হয়ে একদিকে ভালোই হলো।’
কী রকম?
উনার আসলে জাতিকে দেওয়ার আর কিছু নেই।
কেন?
তিনি গতবার তাঁর দুই ছেলেকেই সব দিয়ে দিয়েছেন; জাতিকে দেওয়ার আর তাঁর কিছু নেই।
সবশেষে নিউ ইয়ারের একটা টিপিক্যাল জোক। থার্টিফার্স্টের পার্টি অ্যাটেন্ড করে গভীর রাতে দুজন বাসায় ফিরে চলেছে টলতে টলতে। গলা পর্যন্ত পান করেছে তারা। দুজন একই অ্যাপার্টমেন্টে থাকে। কাজেই ঠিকানা তো একটাই।
ওহে, চারদিক যেভাবে ঘুরছে, বাসায় পৌঁছাতে পারব বলে মনে হয় না।
আমারও তাই মনে হচ্ছে। এক কাজ করলে কেমন হয়?
কী কাজ? কাছাকাছিই আমার শ্বশুরবাড়ি আছে, আজ রাতটা ওখানেই কাটাই।
তাই চল। কিন্তু কীভাবে যাব? চারদিক সবকিছু ঘুরছে যে।
এখানেই দাঁড়া, ঘুরতে ঘুরতে দেখবি শ্বশুরবাড়ি ঠিক আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবে, তখন টুক করে দরজা খুলে ঢুকে যাব।
গুড আইডিয়া।
তারা দাঁড়িয়ে রইল। ঘুরতে ঘুরতে শ্বশুরবাড়ি এল না। একটা গাড়ি এল। পুলিশের গাড়ি। তাদের শ্বশুরবাড়িই নিয়ে গেল। তবে সে অন্য শ্বশুরবাড়ি!!
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ০৫, ২০০৮
Leave a Reply