বিয়ের পর প্রথম শ্বশুরবাড়ি গেছে জামাই। নয়া জামাইয়ের আগমন উপলক্ষে শ্বশুরবাড়িতে নানা রকম খাবারের আয়োজন। পিঠা, পায়েস, পোলাও, মাছ, মাংস-আরও কত কী। দুপুরবেলা বাড়ির সবাইকে ডেকে নিয়ে জামাইকে ঘরের মাঝখানে বসিয়ে খাবার দেওয়া শুরু হলো। প্রথমেই জামাইয়ের পাতে শাশুড়ি তুলে দিলেন পাটশাক। পাটশাক খাওয়ার পর শাশুড়ি বড় আগ্রহ নিয়ে জামাইকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বাবা, শাক কেমন হয়েছে।’ জামাইয়ের সরল উত্তর, ‘ভালো হয়েছে মা।’ শাশুড়ির আবার প্রশ্ন, ‘কেমন ভালো বাবা।’ মনে মনে কিছুটা বিরক্ত হয়ে জামাইয়ের আবার হাসিমুখে উত্তর, ‘খুব ভালো মা, খুব ভালো।’ শাশুড়ি তখন পাটশাকের বাটি থেকে আরও কিছুটা শাক নিয়ে জামাইয়ের পাতে দিয়ে বললেন, ‘বাবা, ভালো লেগেছে; তাই আরেকটু দিলাম, খাও।’ থালার সামনের আশপাশের মাছ-মাংস দেখে কিছুটা বিষণ্ন মনে জামাই মনে মনে ভাবল, শাক খেয়েই তো তার পেট ভরে গেল, ওসব আর কখন খাবে। ভদ্রতার খাতিরে মুখে কিছু প্রকাশ না করে দ্বিতীয়বার দেওয়া পাটশাকও খেলেন জামাই মশাই। দ্বিতীয়বার পাটশাক খাওয়ার পর শাশুড়ি আবার বললেন, ‘বাবা, শাক কি খুব ভালো লাগছে।’ জামাই আগেরবারের মতো এবারও বলল, ‘জি, ভালো লেগেছে।’ একথা শুনে শাশুড়ি ‘বাবা, তাহলে আরেকটু খাও’ বলে আবার যেই জামাইয়ের পাতে শাক দিতে উদ্যত হলেন, অমনি জামাই একদম তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠল, ‘মা, কষ্ট কইরা বারবার পাতে শাক দেওয়ার দরকার কী। পাট ক্ষেতটা একটু দেখ্যাইয়া দেইন। আমি ক্ষেতে গিয়াই পাটশাক খাইতে থাহি।
নিয়ামুল কবীর সজল, ময়মনসিংহ
সূত্রঃ প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৬, ২০০৮
Leave a Reply