বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্য গ্রাম, কিলোগ্রাম, কুইন্টাল এবং মেট্রিক টন, লিটার ইত্যাদি বিভিন্ন ওজনে বেচাকেনা হয়। কিন্তু রান্নাঘরে খাদ্যদ্রব্য ওজন করে নিয়ে রান্না করা ঝামেলার কাজ। ওজন করার পরিবর্তে মেপে নিলে কাজ সহজ হয়। রান্নাঘরে মাপার জন্য কাপ ও চামচের ব্যবহার সুবিধাজনক। এক কাপ ওজনে ২০০ গ্রামের সমান, এক টেবিল চামচ ১৫ মিলিগ্রামের সমান এবং এক চা চামচ ৫ মিলিগ্রামের সমান।
মেট্রিক পদ্ধতিতে ওজন ও দৈর্ঘ্যের মাপ :
মেট্রিক প্রণালীতে ওজনের একক গ্রাম এবং দৈর্ঘ্যের একক মিটার। এক গ্রাম খুব সামান্য ওজন। অত্যন্ত কম ওজন মিলিগ্রামে এবং বেশি ওজন গ্রাম, কিলোগ্রাম ও কুইন্টালে নেয়া হয়। তরল পদার্থের পরিমাণ লিটারে প্রকাশ করা হয়।
১০০০ গ্রাম = ১ কিলোগ্রাম
১০০ কিলোগ্রাম = ১ কুইন্টাল
১ কেজি = ২.২ পাউন্ড
১ কেজি = প্রায় ১ লিটার
৪ লিটার = ১ গ্যালন
এক কিলোগ্রাম ওজনকে সংক্ষেপে ১ কিলো বা ১ কেজি বলা হয়।
দৈর্ঘ্য মাপার একক
১০ মিলিমিটার = ১ সেন্টিমিটার
১০০ সেন্টিমিটার = ১ মিটার
১০০০ মিটার = ১ কিলোমিটার
মেট্রিক পদ্ধতিতে ওজন নেয়ার জন্য বিভিন্ন মাত্রার বাটখারা আছে। বাটখারার পরিমাণগত মাত্রাগুলো মাত্রাগুলো হচ্ছে- ৫ গ্রাম, ১০ গ্রাম, ২০ গাম, ৫০ গ্রাম, ১০০ গ্রাম, ২০০ গ্রাম, ৫০০ গ্রাম ও ১০০০ গ্রাম।
মনে করা যাক, বিস্কুট তৈরি করার জন্য কিভাবে ৩৭০ ও ৭৬৫ গ্রাম ময়দা মাপতে হবে। ৩৭০ গ্রাম ও ৭৬৫ গ্রাম মাপার জন্য নিুলিখিত ওজনের বাটখারা নিতে হবে।
যেমন :
৩৭০ গ্রাম = ২০০ গ্রাম + ১০০ গ্রাম + ৫০ গ্রাম + ২০ গ্রাম
৭৬৫ গ্রাম = ৫০০ গ্রাম + ২০০ গ্রাম + ৫০ গ্রাম + ১০ গ্রাম + ৫ গ্রাম
মাপার জন্য এ বইয়ে কয়েকটি সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে যথা :
চা চা. = চা চামচ
টে চা. = টেবিল চামচ
সে : = সেলসিয়াস
ফা : = ফারেনহাইট
মি. গ্রা. = মিলিগ্রাম
কেজি = কিলোগ্রাম
মি. মি. = মিলিমিটার
সে. মি. = সেন্টিমিটার
বিভিন্ন প্রকার মাপ ও ওজনের তালিকা
কাপের মাপ
৩ চা চা. = ১ টে. চা.
১৬ টে. চা. = ১ কাপ
১ কাপ = ৮ আউন্স
গ্রামের মাপ
১০০০ মি. গ্রাম. = ১ গ্রাম
১০০০ গ্রাম. = ১ কিলোগ্রাম
১০০০ কিলোগ্রাম = ১ মেট্রিক টন
বিভিন্ন ওজন ও মাপের সম্পর্ক
১ চা চা. = ৫ মিলি লিটার
১ টে. চা. = ১৫ মিলি লিটার
১ কাপ = ২৪০ মিলি
১ পাইন্ট = ২.৫ কাপ
সমতুল মাপ
ফা : | সে : | গ্যাসমার্ক | আউন্স | গ্রাম | ইঞ্চি | সে. মি. |
২৫০ | ১২০ | .৫ | ১ | ২৫ | ৮ | ২০ |
২৭৫ | ১৩৫ | ১ | ২ | ৫০ | ৯ | ২৩ |
৩০০ | ১৫০ | ২ | ৩ | ৭৫ | ১০ | ২৫ |
৩২৫ | ১৬০ | ৩ | ৪ | ১০০ | ১৫ | ৩৮ |
৩৫০ | ১৮০ | ৪ | ৮ | ২২৫ | ২০ | ৫০ |
৩৭৫ | ১৯০ | ৫ | ১০ | ২৭৫ | ||
৪০০ | ২০০ | ৬ | ১৬ | ৪৫০ | ||
৪২৫ | ২২০ | ৭ | ||||
৪৫০ | ২৩০ | ৮ |
ওভেনে বেক করার জন্য বিভিন্ন মাত্রার তাপ
তাপ | সেলসিয়াস (সেঃ) | ফারেনহাইট (ফাঃ) | খাবার |
অতিমৃদু | 120º | 250º-275º | মেকারুন |
মৃদু | 160º | 300º-325º | পুডিং, মিটলোফ |
মধ্যম | 180º | 350º-375º | নানখাতাই, জ্যাম বিস্কুট, কেক, মেকারনি চিজ |
উচ্চ | 210º | 400º-425º | বিস্কুট, পাউরুটি, মাফিন, পিৎজা, পাই |
অতিউচ্চ | 320º | 450º-475º | ক্রিম পাফ, একলেয়ার |
রান্নার উপকরণ মাপার পদ্ধতি
শুকনা খাদ্য মাপা
চাল, আটা, ময়দা, চিনি, বেকিং পাউডার, গুঁড়া মসলা ইত্যাদি শুকনা খাদ্য কাপ বা চামচ দিয়ে মাপতে হলে মাপার পাত্রে উপকরণ হালকাভাবে ভরতে হবে। তারপর ছুরি বা কাঠি দিয়ে পাশের চিত্রের ন্যায় পাত্রের মুখ সমান করে দিতে হবে। কাপ ঠেসে উঁচু করে ভরলে সব সময়ে সমান মাপ হয় না। কেক, বিস্কুট, প্যানকেক ইত্যাদি যেসব খাবারে বেকিং পাউডার ব্যবহার করা হয় সেই সব খাবার প্রস্তুত করার সময় উপকরণের মাপ ভুল হলে খাবার ভাল হয় না। চপ, কাটলেট, কালিয়া, কোরমা, পোলাও, পিঠা সব রান্নার জন্যই উপকরণ মেপে নেয়া প্রয়োজন।
তরল ও নরম খাদ্য মাপা
রান্নাঘরে তেল, ঘি, ডালডা, দুধ, দই, সিরকা, বাটা মসলা, সস ইত্যাদি কাপ ও চামচ দিয়ে মাপা যায়। বেশি পরিমাণে মাপার জন্য লিটারের পাত্র ব্যবহার করা যায়। আবার কোনও হাড়ি, গামলা, মোলড ইত্যাদি পাত্রের মাপ জানা না থাকলে পাত্রটি পানি দিয়ে ভরে সেই পানি কাপ দিয়ে মেপে নিলে পাত্রটির মাপ জানা যায়। তরল খাদ্য মাপার জন্য পাইন্ট এবং গ্যালনের পাত্রও ব্যবহার করা হয়।
Leave a Reply