যাঁরা নতুন সংসার শুরু করেছেন অথবা চাইছেন রান্নাঘরের পুরোনো জিনিসপত্র পাল্টাতে, তাঁরা জেনে নিন বিভিন্ন সামগ্রীর দরদাম ও প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য।
গ্যাসের চুলা
বাণিজ্যিকভাবে গ্যাসের ব্যবহার শুরু হওয়ার পর গৃহিণীদের রান্নার কাজে গ্যাসের চুলার ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নানা মডেলের গ্যাসের চুলা পাওয়া যায়। দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করছে সাশ্রয়ী মূল্যের গ্যাসের চুলা এবং আমদানিকারকেরা আনছেন বিভিন্ন মডেলের ডবল বা সিঙ্গেল বার্নার কুকার। দেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে আরএফএল, ন্যাশনাল, র্যাংগস ও গাজী ব্র্যান্ডের চাহিদা বেশি। তবে আমদানি করা গ্যাসের চুলার ক্ষেত্রে নোকা, স্পার্কো, জেসিএস, টার্বো, সুপারম্যান ইত্যাদি ব্র্যান্ডের গ্যাসের চুলা জনপ্রিয়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চুলার দাম ৭০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আবার ব্র্যান্ড ভেদে দাম তিন হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
পানির ফিল্টার
পানি ফুটানো অনেক ক্ষেত্রেই ঝামেলা ও সময়সাপেক্ষ। আর এ ক্ষেত্রে পানি বিশুদ্ধকরণের কাজ সহজ করে দেয় পানি বিশুদ্ধকরণ ফিল্টার। এটি দুই ধরনের রয়েছে। একটি হলো সাধারণ, অন্যটি বৈদ্যুতিক। বৈদ্যুতিক ফিল্টারের সুবিধা হলো, পানি বিশুদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে এতে পানি ঠান্ডা ও গরম—দুই-ই হয়। পানি বিশুদ্ধকরণ সাধারণ ফিল্টারের দাম এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। আর এর চেয়ে একটু উন্নত মানের ফিল্টারের দাম এক হাজার ৬০০ থেকে চার হাজার টাকা পড়বে। এ ছাড়া বৈদ্যুতিক পানির ফিল্টারের দাম আড়াই হাজার থেকে সাত হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
রাইস কুকার
অল্প সময়ে নির্বিঘ্নে ভাত রান্নার যন্ত্র হিসেবে রাইস কুকার জনপ্রিয়। মিয়াকো, নোভা, নোকা, পাইলট, ন্যাশনাল মারকো ইত্যাদি ব্র্যান্ডের রাইস কুকারের চাহিদা বেশি। এগুলোর অধিকাংশ চীন ও জাপানের তৈরি। রাইস কুকারের দাম মডেল, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং আকারভেদে ভিন্ন হয়। ধারণক্ষমতাভেদে দাম পড়বে দেড় হাজার থেকে চার হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
প্রেশার কুকার
তাপ ও চাপে দ্রুত রান্নার অন্যতম মাধ্যম প্রেশার কুকার। বাজারে এক থেকে ছয় লিটার ধারণক্ষমতার প্রেশার কুকার রয়েছে। দেশে তৈরি বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ড বাজারে পাবেন। এর মধ্যে কিয়াম ও গাজীর চাহিদাই বেশি। এর দাম ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তৈরি প্রেশার কুকারের দাম পড়বে ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা। ভারতের হকিন্স কোম্পানির প্রেশার কুকার কেনা যাবে এক হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।
ব্লেন্ডার
ওয়ার্লপুল ও ফিলিপস ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডারের দাম পড়বে দুই হাজার ৭০০ থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডারের দাম আড়াই হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে কেনার আগে ভালো প্রতিষ্ঠানের তৈরি কি না, তা দেখে কেনাই ভালো।
স্যান্ডউইচ মেকার
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্যান্ডউইচ মেকারের দাম পড়বে এক হাজার ৮০০ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। ফিলিপসের স্যান্ডউইচ মেকার পাবেন এক হাজার ৯০০ থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে।
জুসার
ফলের রস তৈরির জন্য অনেকে জুসার ব্যবহার করেন। বাজারে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নানা মডেলের জুসার পাওয়া যাবে। ওয়ার্লপুল ও ফিলিপসের জুসারের চাহিদা বাজারে বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানের জুসারের দাম পড়বে তিন হাজার ৯০০ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
এ ছাড়া রান্নাঘরের জন্য আরও নানা সামগ্রী রয়েছে। টোস্টার মিক্সার, ননস্টিক প্যান, রুটির ননস্টিক তাওয়া, ওভেন খুবই প্রয়োজনীয়। বাজারে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওভেন পাবেন আপনি। নানা ব্র্যান্ডের এসব ওভেনের দাম পড়বে ছয় হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।
কোথায় পাবেন
পুরান ঢাকার ইসলামপুর, চকবাজার, গুলিস্তান, গাউছিয়া, নিউমার্কেট, ডিসিসি মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, বায়তুল মোকাররম, গুলশান ও মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় পাবেন আপনি রান্না বা রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। তবে পণ্য ক্রয়ের আগে অবশ্যই ব্র্যান্ড ও দাম যাচাই করে কিনবেন। তাহলে আর দেরি কেন, ইচ্ছামতো সাজিয়ে নিন আপনার রান্নাঘর।
সাইদ আরমান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০১, ২০১০
Leave a Reply