আর কদিন পরই সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে উঠবে ঈদুল ফিতরের চাঁদ। ঈদ সামনে রেখে রাঁধুনির হেঁশেলে রান্নার পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে এরই মাঝে। কীভাবে কী রান্না হবে, কোন রান্না সকালে আর কোন রান্না বিকেলে ও রাতে, কোন কোন পদের রান্না হবে ইত্যাদি পরিকল্পনায় বাসার গৃহিণীরা এখন বেজায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাজারের দায়িত্ব গৃহকর্তার ওপর পড়লেও রান্নাবান্নার দায়িত্বটা পড়ে পুরোটাই গৃহকর্ত্রীর ওপর। রান্না ভালোমন্দ হওয়াটা নির্ভর করে রাঁধুনির মন-মেজাজের ওপর। আর রান্না ভালো হলে সব প্রশংসার ভাগীদার রাঁধুনি হলেও কিছু প্রশংসার ভাগ কিন্তু ভালো মসলাকে দিতেই হয়।
ঈদে মজার মজার রান্না হবে। আর এসব রান্নার জন্য চাই হরেক পদের মসলা। চকবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মসলাবাজার হলেও কারওয়ান বাজার আর নিউমার্কেটেও প্রায় সব ধরনের মসলা পাওয়া যায়। কারওয়ান বাজারের মসলা-ব্যবসায়ী মো. মনির জানান, গতবারের তুলনায় এবার মসলার বাজার একটু চড়া। কেজিপ্রতি মসলার দাম এবার ১০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর শুধু এলাচের দামই কেজিপ্রতি গত এক বছরে বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত। আর মসলার দামটা একটু বেশি হওয়ায় ক্রেতারাও আগের চেয়ে পরিমাণে অনেক কম মসলা কিনছেন। পাইকারি দরে মসলা কিনলে খুচরা বাজারের চেয়ে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কম দামে পাওয়া যাবে।
এবার জেনে নেওয়া যাক ঈদের মসলার বাজারের দরদাম
এখানে কেজি ও গ্রাম হিসাবে মসলার দাম দেওয়া হলো: সাদা এলাচ প্রতি ২৫০ গ্রাম ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কালো এলাচ প্রতি কেজি ৪৫০, তেজপাতা প্রতি কেজি ১৪০, দারচিনি প্রতি কেজি ১৩০, লবঙ্গ প্রতি ২৫০ গ্রাম ১৩০, কালো গোলমরিচ প্রতি কেজি ৩২০ ও সাদাটা ৪৬০ টাকা; জিরা ভারতীয় প্রতি কেজি ২৪০ ও ইরানি ৩৩০ এবং সাধারণ ২৮০ টাকা, শাহি জিরা প্রতি ২৫০ গ্রাম ১২৫, পাঁচফোড়ন প্রতি কেজি ৭০, জয়ত্রি প্রতি ২৫০ গ্রাম ২০৫, জায়ফল প্রতি কেজি ৫৩০, কাঠবাদাম প্রতি কেজি ৫০০, কাজু বাদাম প্রতি কেজি ৬০০, আলু বোখারা প্রতি কেজি ৪৩০, কিশমিশ প্রতি কেজি ২৭০-২৫০, পোস্তদানা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতি ২৫০ গ্রাম ২৮০, ২৪০ ও ৭৫ টাকা পর্যন্ত; পেস্তাবাদাম প্রতি ২৫০ গ্রাম ৩৮৫, জাফরান প্রতি ২৫০ গ্রাম ৯০ হাজার টাকা, মোরব্বা প্রতি কেজি ৬০, কাবাব চিনি প্রতি কেজি ৪৬০, গোটা ধনিয়া প্রতি কেজি ৬৫, ধনিয়ার গুঁড়া প্রতি কেজি ৯০, হলুদের গুঁড়া প্রতি কেজি ১২০, মরিচের গুঁড়া প্রতি কেজি ১২০, শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ১৬০, আদা প্রতি কেজি ৬০, রসুন প্রতি কেজি ৬০ এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২০ টাকা।
যদি মসলা পরিমাণে একটু বেশি কিনতে চান তাহলে যেতে হবে কারওয়ান বাজারে। কারণ, কারওয়ান বাজারে পাইকারি দরে মসলা বিক্রি হয়। আর পাইকারি দরে মসলা কেনার সুবিধা হলো খুচরা দামের চেয়ে এখানে বেশ টাকা সাশ্রয় করা যায়। আর খুচরা দরে মসলা কিনতে চাইলে সবচেয়ে উপযোগী বাজার হলো নিউমার্কেট। এই বাজারের সুবিধা হলো যতটুকু চাহিদা ঠিক ততটুকুই মসলা কিনতে পাওয়া যায়।
সুজন সুপান্থ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০০৯
Leave a Reply