পঞ্জিকায় মাস চলছে এখন বৈশাখ। মাথার ওপর প্রখর সূর্যের তাপ, আর পয়লা বৈশাখের জমজমাট উৎসবের মধ্য দিয়ে গ্রী্নকে স্বাগত জানানোও শেষ। এখন গরমকে আপন করে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় আছে কি? গরম আবহাওয়া নিয়ে আমাদের বিরক্তির শেষ নেই। তারপর বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংকট নিয়ে দিনগুলো পার করা কম দুসাধ্য নয়। তবুও চেষ্টা চলতে থাকে, যতটুকু ভালো থাকা যায়। ভালো থাকা মানে ভালো খেয়ে-পরে সময় পার করা। তাই গরমকালে এই ভালো থাকার জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো খাবারদাবার। এ জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় চাই সঠিক সংস্কার।
বিশ্বের সব দেশের কথা জানি না। তবে গ্রী্নপ্রধান বাংলাদেশের খাদ্য ঐতিহ্যে রান্না হয় সবকিছু। প্রতিটি উপকরণের স্বাদ, রং আর চেহারা বদলে দেওয়ার জন্য আমাদের যত্নআত্তি রান্নার শেষ নেই। তাই আমাদের আপন সঙ্গী হলো তেল আর হরেক পদের মসলা। কিন্তু গরমে কষ্ট হলেও ভালো থাকার জন্য এই তেল-মসলার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। তেল-মসলা কমানোর যখন কথা হচ্ছে তখন বিরিয়ানি, তেহারির মতো মজার খাবারগুলো খাদ্য তালিকা থেকে কেটে দেওয়া জরুরি। এ জন্যই হয়তো এ দেশে শীতের সময় বিয়েশাদির ধুম পড়ে যায়। তেল, মাখন, মেয়নেজ, ক্রিম ও ক্রিমযুক্ত সালাদ ড্রেসিং যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে। আর পরিহার করতে হবে বাজারের নানা জনপ্রিয় তরল পানীয়। অবাক হয়ে কোনো লাভ নেই! গরম থেকে বাঁচার জন্য সবার আগে সবচেয়ে সহজলভ্য এ পানীয় আসলেই আমাদের শরীরের জন্য মোটেও সহায়ক নয়। এতে ব্যবহৃত বিভিন্ন রং, স্বাদবর্ধক উপকরণ আমাদের শরীরে খানিকটা স্বস্তি দিলেও, টাকা খরচ করে আমরা আর অন্য কোনো পুষ্টিগুণ পাই না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড· খুরশীদ জাহান খাদ্যতালিকায় গুরুত্বের সঙ্গে হালকা ও কম চর্বিযুক্ত খাবার রাখতে বলেন, যা আমাদের শরীরের জন্য পুষ্টিবর্ধক। গরমে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে, তা হলো এ সময় আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পানি চলে যায়। এর সঠিক পূরণ অত্যন্ত জরুরি। তাই অনেক বেশি পানি পান করতে হবে। খাদ্য তালিকার খাবারে আরও থাকবে সবজি ও প্রচুর ফল। ‘ফল নিয়ে বলতে গেলে ফলের দাম নিয়ে চিন্তা করতে হয়। যখন বলছি দৈনিক একটি করে ফল খেতেই হবে, তখন বাজারে দেশি হোক আর বিদেশিই হোক, যেকোনো ফলেরই যে দাম তা মধ্যবিত্তের আয়ত্তের বাইরে। তবুও ভালো থাকার জন্য চেষ্টা তো চালিয়ে যেতে হবে। ফল এই গরমে আমাদের কাছের বন্ধু।’ জানালেন ড· খুরশীদ। গরমকালে ফলের প্রয়োজনীয়তা বেশি বলেই হয়তো এ সময় হরেক পদের রসালো ফলে ছেয়ে যায় বাজার। তরল পানীয়ের পরিবর্তে বিভিন্ন ফলের ঠান্ডা রস ও লেবুর শরবতের বিকল্প নেই। কিন্তু বাইরে খোলা আকাশের নিচে বানানো বিভিন্ন শরবতের প্রতি দৃষ্টি না দেওয়াই ভালো। সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত কি না তা দেখতে হবে। গরমে অন্যান্য করণীয় হলো-
- সকালের নাশতায় তেলে ভাজা পরোটা ও সবজি এড়িয়ে চলাই ভালো। নাশতা হতে হবে অবশ্যই পুষ্টিকর ও ফলযুক্ত। সারা দিনের খাদ্য তালিকা যাই হোক না কেন, সকালের খাবার হতে হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় যেন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বড়দের ক্ষেত্রে খাবারে কমপক্ষে ৪০০ ক্যালোরির জোগান থাকা উচিত। সকালে বা রাতে যখনই হোক না কেন, দুধ থাকতে হবে। এই গরমে দুধটা ঠান্ডা হলে আর তাতে কোনো ফ্লেভার নিয়ে খেলে সেটার তো কোনো তুলনাই নেই। নয়তো চলতে পারে হালকা রং চা বা ভেষজ চা।
- দুপুরের খাবারে সবজি একটা জরুরি খাবার। সেটা তেলে না ভেজে গ্রিল বা বাষ্পে ভাপ দিয়ে নিয়ে খাওয়া যেতে পারে। সবজি রান্নায় অল্প আঁচ হলে তার পুষ্টিগুণ অটুট থাকে। অন্যান্য খাদ্য তালিকার পাশাপাশি দই গরমকালে আমাদের শরীরের এক মহা আপনজন-সেটা টক দই বা মিষ্টি দই যাই হোক না কেন। বেশি কোলেস্টেরল খাবার পরিহার করার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সয়াবিন তেলের পাশাপাশি অলিভ তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে। খাবার মান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। খাবার পর ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত বা যেকোনো ফল খাওয়ার অভ্যাস ভালো।
- রাতে খাদ্য তালিকায় ভারী খাবার না রাখাই ভালো। অনেক রাত করে রাতের খাবার খাওয়া শরীরে চাপ সৃষ্টি করে। এতে পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা, বিশেষ করে ডায়রিয়া, বদহজম, বমি বমি ভাব হয়। তাই আগেই রাতের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে দুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে গরম দুধ না খাওয়াই ভালো।
- খাবার দীর্ঘ সময় পর বেশি করে না খেয়ে, কম সময় পরপর (চার ঘণ্টা কমপক্ষে) বারবার খাওয়ার অভ্যাস ভালো। তবে পরিমাণ অবশ্যই কম হবে। খাওয়ার সময়টা ঠিকভাবে মেনে চলা উচিত। সময় মেনে খাবার অভ্যাস শরীরের জন্য সহায়ক।
- দৈনিক কমপক্ষে আট গ্লাস পানি খাওয়া উচিত হলেও এই গরমে পানি খাওয়ার অভ্যাস বাড়িয়ে দিতে হবে। সঙ্গে দুধ, ফলের রসসহ যেকোনো পুষ্টিকর পানীয় খাওয়া যেতে পারে। আর আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, তাল, তরমুজ, জামসহ বিভিন্ন রসালো ফল তো আছেই।
সূত্রঃ শিখতী সানী, দৈনিক প্রথম আলো।
jay
aamaar computer-e khanda ‘ta’ ta asche na keno bolun to? ekta block asche sei jaygay. ar bangla okkhor (lipi) te kivabe likhbo janaben?
upokrita habo.
DHANYOBAAD.
NAMOSKAAR.
jay
APNADER UTTOR KOTHAY KIVABE PABO?
Bangla Recipe
জয়, আপনি Solaimanlipi ফন্টটা ডাউনলোড করে নিতে পারেন। কম্পিউটারে ইউনিকোড-এর সেটিংসটা ঠিক করার পর শুধু Vrinda ফন্টটা ইনস্টল হয়। এই ফন্টে ‘খণ্ড ত’ ঐ বক্স আকারেই দেখায়।
বাংলা লেখার জন্য “Avro Keyboard” ডাউনলোড করে নিতে পারেন omicronlab.com থেকে। এটা বাংলা লেখার ফ্রি সফটওয়ার।
উত্তর দিতে দেরী হওয়াতে দুঃখিত। জরুরী হলে সরাসরি ইমেইল করতে পারেন [email protected] বা [email protected] -তে।