বাদিয়ার বেশ ধরি, বেড়ায় সে বাড়ী বাড়ী,
আইলেন ভানুর মহলে।
খুলি হাঁড়ি ঢাকনি, বাহির করয়ে ফণী,
তুলিয়া লইল এক গলে।।
বিষহরি বলি দেয় কর।
শুনিয়া যতেক বালা, দেখিতে আইল খেলা,
খেলাইছে মাল পুরন্দর।।
সাপিনীরে দেয় থোব, সাপিনী বাঢ়য়ে কোব,
দন্ত করি উঠি ধরে ফণা।
অঙ্গুলী মুড়িয়া যায়, সাপিনী ফিরিয়া চায়,
ছুঁয়ে যায় বাদিয়ার দাপনা।।
খেলা দেখি গোপীগণ, বড় আনন্দিত মন,
কহে \”তুমি থাক কোন্ স্থানে\”?
\”থাকি বনের ভিতরে, নাগদমন বলে মোরে,
নাম মোর জানে সব জনে।।
বসন মাগিবার তরে, আইনু তোমার ঘরে,
বস্ত্র দেহ আনিয়া আপনি।
ছেঁড়া বস্ত্র নাহি লব, ভাল একখানি পাব,
দেখি দেও শ্রীঅঙ্গের খানি।\”
\”বটের ভিখারী হও, বহু মূল্য নিতে চাও,
নহিলে শোভিত চায় বটে।
বনে থাক সাপ ধর, তেনা পরিধান কর,
সদাই বেড়াও নদীতটে।\”
বেদে কহে ধীরে ধীরে, \”তোমার বস্ত্র নিব শিরে,
মনে মোর হবে বড় সুখ।
তোমার সঙ্গ করিতে, অভিলাষ হয় চিতে,
তুমি যদি না বাসহ দুখ।।\”
\”চুপ করে থাক বেদে, যা পাও তা নেও সেধে,
ভরমে ভরমে যাও ঘরে।\”
\”চুরি চারি নাহি করি, ভিক্ষা করি পেট ভরি,
আমি ভয় করিব কাহারে?
তোমা লঞা করি ক্রীড়া, তুমি কেন মান পীড়া।
সুখী কর এ দুখিয়া জনে।\”
দ্বিজ চণ্ডীদাসে কয়, বাদিয়া যে এই নয়,
বুঝিয়া দেখহ আপন মনে।।
————–
শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ং দৌত্য ।। বরাড়ী ।।
ভানুর মহলে – বৃষভানু রাজার বাড়ীতে। পুরন্দর – বিষ্ণু। থাবা। থোব – কোপ, রাগ। নাগদমন – কালীয় দমন–সাপুড়ে। বটের – কড়ি। তেনা – ছেঁড়া বস্ত্র। ভরমে ভরমে – (এখানে) মানে মানে।
Leave a Reply