ছায়া-মানুষের ছায়া,
ছুটছে, ছুটছে, খাল, বিল, পেরিয়ে প্রান্তর সীমা
বিল-বাঁওড়, হাওর-তল্লাট, দিগ্বিদিক, ঊর্ধ্বশ্বাস
লক্ষ, কোটি ঊর্ধ্বমুখী, পায়ে-পায়ে, পার হচ্ছে
তালেশ্বর, বালেশ্বর, বংশী, ধলেশ্বরী, কীর্তিনাশা,
বৈতরণী পাড় ছুঁয়ে, ক্ষুদ্র হয়ে আসছে মুণ্ড, ধড়, হূিপণ্ড, পাঁজর
দূর থেকে, স্টিমারের ভেঁপু, লঞ্চের মাস্তুল,
মন্দিরে কাঁসার ঘণ্টা, আজানের ধ্বনি, দাঁড়ে-বৈঠায়
ঠক ঠক, খুঁটি ছেঁড়া গরু-ছাগলের আর্তস্বর, পরিত্রাহি
সহস্র পিঁপড়ের, কালে, কালযাত্রা নরক অবধি;
সন্ধ্যা আলো আঁধারিতে
মাঝে মাঝে ভোঁ ভোঁ শব্দে জেগে উঠছে চরাচর,
ঘন কালো মেঘ চিরে অতীত-আগামী, একটি মাত্র,
বিদ্যুতের শিখা, ঝড়, ঝড়ের তাণ্ডব
বন্ধ হলে পারাপার, বেজে উঠবে শিঙ্গা,
মথিত, মন্থর দিন, গর্জে বাজ,
কোনো কাহিনির অবশেষে নিবু-নিবু
প্রদীপের দিগ্ভ্রান্ত শিখা আম-জাম-কাঁঠালের
নিথর শিয়রে ঝাঁপ দেয়, অঘোর তমিস্রায়
একরাত্রে জেগে উঠে, স্বপ্ন দেখে, হাড়ে ও মজ্জায়;
মাটি-বালিয়াড়ি স্তর ভেঙে চোখে-চোখে নিরাশ্বাস
কোথাও কখনো ছিল একটি দেশ, কেঁদে উঠত মানবসন্তান।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৯, ২০১০
Leave a Reply