স্পট এক
পানামের পথে হাঁটতে হাঁটতে আমি আর বাকার
পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি:
কবেকার ঈশা খাঁর দাপুটে আনন্দ বিনোদন ছিল
এই ধুলো-ওড়া সড়ক জুড়ে
পাঁচ তলা অট্টালিকার অহমিকা মাড়িয়ে দু-চারটে বালক
হইচই খেলছে, এ খেলার কোনো নামধাম নেই।
ইমারতগুলো সুনসান বিদ্যায়-বুদ্ধিতে আমাদের
জ্ঞান দিচ্ছে নীরব নিথর মন্ত্রে:
কোনো রক্তপাতের অর্থবোধক চিহ্নই তো নেই
খামোখাই মারামারি কাটাকাটি শক্তি আর সম্পদের
বিচ্ছুরণে সাজগোজ করে আছে সময়, নির্মিত হয়েছে
জাদুঘর, পিকনিক-স্পট, বিহারবিচরণ-মাটি
কেউ কাউকে দেখিয়ে দিয়ে বলছে না: এ হচ্ছে
ঈশা খাঁর বংশধর কিংবা পাঁচপীরের অনুসারী
এরা এখন শুধু মানুষ আর প্রকৃতির পেছনে সারিবদ্ধ
রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-ঝঞ্ঝা যুদ্ধবিগ্রহের স্তূপীকৃত সম্পদ
মানুষ নির্মাণের মানুষগুলোই ধ্বংসের নামান্তর
অনেক নিশিবিহঙ্গ অনেক সন্ধ্যাতারার নিশ্চুপ সাক্ষী
সপ্তর্ষিমণ্ডলের ঝিলিক-তোলা হাহাকার
আর আমার এই কাব্যলক্ষ্মীর প্রস্বাদ মাত্র
বিশ্বনন্দিত হয়েও নিঃস্ব: ওরা কেউ নেই
বালকের মুখের এবড়ো-থেবড়ো গল্পের মতো
ওরা কেউ নেই
যে গল্পের অনেক ওজন, তার স্বজন বলে কেউ নেই
স্পট দুই
আকাশ থেকে মোবাইল আসে:
পৃথিবী পুড়ছে লাল-নীল-বেগুনি রং নরকের আগুনে
তোমাদের কম্পিউটারে আলিফ নামের লম্বা দাগটি ছাড়া
আর কিছুই থাকছে না;
জীবনের শুরু আর সমাপ্তির
শাসন অমান্যের ভাইরাসে ঠাসা কম্পিউটার
তোমাদের বিজ্ঞানের যজ্ঞ ভরে উঠছে দুষ্কর্মে:
পাপ নামের ভালোবাসা
এবং ভালোবাসা নামের পাপগুলো
ফরমালিনযুক্ত ছোট-বড় মাছ ছাড়া আর কিছু নয়
তোমাদের খেতে হবে, পেতে হবে রাসায়নিক শাক-সবজির স্বস্তি
আকাশ থেকে মোবাইল আসে: আকাশ বলে কিছু নেই
এটা তোমাদেরই লেখা নাম, আঙুলের জবরদস্তি।
সানাউল হক খান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ১১, ২০০৯
Leave a Reply